সংবাদদাতা আলিপুরদুয়ার: বুধবার চা বাগানকেও বন্ধের আওতায় রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু, চা বাগানগুলিতে এদিন বন্ধের ছিটেফোঁটাও প্রভাব পড়েনি। নাগরাকাটা থেকে মাদারিহাট, কালচিনি থেকে কুমারগ্রাম, আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের ১১৬টি চা বাগানের প্রায় সব বাগানেই স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। বন্ধের আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন বিজেপির আলিপুরদুয়ারের সভাপতি সাংসদ মনোজ টিগ্গা। তিনি বলেছিলেন, বন্ধকে সমর্থন করার জন্য তাঁরা শ্রমিকদের কাছেও আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু, এদিন চা বলয় বিজেপির বন্ধে কোনও সাড়াই দিল না।
গত লোকসভা ভোটে জিতলেও চা বলয়ে জোর ধাক্কা খেয়েছিল বিজেপি। চা বলয়ের ভোটব্যাঙ্কে ব্যাপক ধস নেমেছিল পদ্ম শিবিরের। বুধবার বিজেপির ডাকা বন্ধে সাড়া না দিয়ে চা শ্রমিকরা যেন ফের সেই বার্তাই দিলেন। এমনটাই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।
লোকসভা ভোটের পরে বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠন বিটিডব্লুইউতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়েছে। যার জেরে বিটিডব্লুইউ নেতৃত্ব বুধবারের বন্ধে নিষ্প্রভ ছিল। ডুয়ার্সের চা বাগানে বড় সংগঠন বিটিডব্লুইউ নিষ্প্রভ থাকার কারণেই
বন্ধে প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। বিটিডব্লুইউয়ের অন্যতম নেতা তেওফিল সোরেন বলেন, বুধবারের বন্ধের কথা আমরা কেউ জানি না। প্রায় সব বাগানেই পাতা তোলা থেকে ফ্যাক্টরি সর্বত্রই কাজ হয়েছে।
তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, বিজেপি রাজ্যে লাগাতার অরাজকতা করে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েই তো সবার আগে আর জি করের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে দোষীদের ফাঁসি চেয়েছিলেন। আমরা শ্রমিকদের এটা বোঝাতে পেরেছি। তা ছাড়া বিজেপি তো শ্রমিক স্বার্থে কিছুই করেনি। শ্রমিকরা এটা বুঝতে পেরেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির ডাকা বুধবারের বন্ধ প্রত্যাখ্যান করেছেন চা শ্রমিকরা।
এদিন সকাল থেকে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের অধীন নাগরাকাটা, মাদারিহাট, কালচিনি, আলিপুরদুয়ার-২, ফালাকাটা ও কুমারগ্রামের চা বগানগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। বন্ধের কোনও প্রভাব কোথাও ছিল না। এমনকী বিজেপির জেলা সভাপতি মনোজবাবু যে চা বাগানের বাসিন্দা বীরপাড়ার সেই সিংহানিয়া বাগানও এদিন সচল ছিল। সিংহানিয়ার পাশে মনোজ টিগ্গার খাসতালুক দলমোড়, জয় বীরপাড়া, বান্দাপানি, ডিমডিমা ও রামঝোরা চা বাগানেও এদিন সকাল থেকে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়।
বুধবার চা বাগানের কাজকর্ম যে স্বাভাবিক ছিল বিজেপির জেলা সভাপতি মনোজবাবু কার্যত তা স্বীকারও করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, আসলে পুলিস ও তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজন জোর করে শ্রমিকদের কাজে যেতে বাধ্য করেছিল। তারমধ্যেও বহু বাগানে বন্ধ সফল হয়েছে।