• সহ্যের সীমা ছাড়াবেন না, গেরুয়া বাহিনীকে হুঁশিয়ারি মমতার
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বদলা নয়, বদল চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর সহনশীলতার প্রেক্ষাপটে সৌজন্যের জবাব কুৎসা এবং বেলাগাম নৈরাজ্য হয়ে উঠেছে বলেই ক্ষোভ বাড়ছে একটা মহলের। এবার গেরুয়া শিবিরের সেই ‘স্বার্থান্বেষী’ রাজনীতিকেই প্রত্যাঘাত করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘দুর্বল ভাববেন না। এখনও সহ্য করছি, ধৈর্য ধরছি। এবার বলছি, সহ্যের সীমা ছাড়াবেন না। আমি কী করতে পারি, তা আপনারা কেউ জানেন না।’ 

    আর জি কর কাণ্ডের পর নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, এখন তার অভিমুখ বদলে গিয়েছে হিংসার রাজনীতিতে। নবান্ন অভিযান এবং বুধবার বন্‌঩ধের মাধ্যমে তাতে সিলমোহর দিয়েছে বিজেপি। মৃত্যু নিয়ে এই রাজনীতির বিরুদ্ধেই এদিন গর্জে উঠলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর সাফ কথা, ‘ওরা প্রতিদিন যেভাবে গালিগালাজ করছে, তাতে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। তাই আজ বলছি, যা ভালো বুঝবেন, করবেন। আমি কোনও অশান্তি চাই না। কিন্তু যারা কুৎসা, অপপ্রচার, চক্রান্ত করছে, রোজ কামড়াচ্ছে, তাদের কামড়াবেন না। তবে ফোঁস তো করতে পারেন।’ এপ্রসঙ্গে মমতা উল্লেখ করেন শ্রীরামকৃষ্ণের সেই সাপের কাহিনি। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘চক্রান্তকারীদের মুখোশ খুলে দিয়ে ফোঁস করতে শিখুন। ফোঁস করে সবকিছু ফাঁস করে দিন।’

    ক্ষমতার লোভে নির্বাচিত সরকারকে এবং বাংলাকে অপদস্থ করতেই যে গেরুয়া শিবির মরিয়া হয়ে উঠেছে, তা এখন বলছে সাধারণ মানুষও। এই প্রেক্ষিতেই মমতার হুঙ্কার, ‘এত তাড়াহুড়ো কীসের? চারটি বিধানসভার উপ নির্বাচনে গোহারা হেরেও লজ্জা হয়নি বিজেপির। এখন চেয়ার দখলের লড়াইতে নেমেছে। লাশের রাজনীতি কিংবা গুলি-বন্দুক নয়, ক্ষমতা থাকলে ভোটে যাও।’ মমতার চ্যালেঞ্জ, ‘কেউ কেউ মনে করছেন, এটা বাংলাদেশ। মোদিবাবু, আপনার পার্টিকে দিয়ে বাংলায় আগুন লাগাচ্ছেন! কিন্তু এই আগুন অসম, উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, দিল্লিতেও ছড়িয়ে পড়বে। আপনার চেয়ার টলমল করে দেব। নরেন্দ্র মোদি, আপনার পার্টি আমায় চেনে কি না জানি না। সব ফান্ডিং আমি এন্ডিং করে দেব। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমার জন্ম। আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই মৃত্যু হবে। পারলে টাচ করে দেখুন।’ আসন্ন দুর্গাপুজোতেও বিজেপির চক্রান্ত সফল হতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন মমতা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির উল্টো ব্যাখ্যা করে অবশ্য বিজেপি আসরে নামিয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মমতাকেই বলেছেন, ‘দিদি, রক্তচক্ষু দেখাবেন না।’
  • Link to this news (বর্তমান)