• সেমিনার হলে তরুণীর কাছে পড়ে থাকা বহু জিনিস পরিকল্পনা করেই স্থান বদল করা হয়, তদন্তে দাবি সিবিআইয়ের
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করের যে সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসকের দেহ মিলেছিল, সেখানে থাকা বহু জিনিস এদিক ওদিক করা হয়। পরিকল্পনা করেই সেগুলিতে হাত দিয়েছিলেন একাধিক ব্যক্তি। খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করেছে সিবিআই। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার সন্দীপ ঘোষের কী ভূমিকা ছিল, সেটাই তাঁকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি বুধবার কলকাতা পুলিসের চতুর্থ ব্যাটালিয়নের এএসআই অনুপ দত্তের পলিগ্রাফ টেস্ট হয় সিবিআই দপ্তরে।

    আর জি করের ঘটনার তদন্তের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ঘটনাস্থল অদল বদল (অল্টার) করা হয়েছে। হাসপাতালে ওইদিন ডিউটিরত নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন, সেমিনার হলে প্রোটেকশন দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। তরুণীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বহু লোক ঢুকতে শুরু করেন। তাঁরা দু’একজনকে ওই হলে ঢুকতে নিষেধ করলে বলা হয়, উপরতলার নির্দেশ নিয়েই আসছেন। নির্দিষ্ট কাজ আছে বলেই বারবার এই ঘরে ঢুকতে বেরতে হবে। এরপর কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি। এখান থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা, হাসপাতালের শীর্ষকর্তাই গোটা বিষয়টি প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। তদন্তে উঠে আসছে মহিলার দেহের সামনে যে সমস্ত জিনিস পড়েছিল, সেগুলির স্থান পরিবর্তন করা হয়।  একজন নন, একাধিক ব্যক্তি ওই সমস্ত জিনিসে বারবার হাত দিচ্ছিলেন। সিবিআইয়ের বক্তব্য, সেমিনার হলে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের সিংহভাগই ডাক্তার ছিলেন। তাঁরা জানতেন, সেখানে পড়ে থাকা জিনিসে হাত দিলে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হতে পারে। তারপরেও তাঁরা কোনও আপত্তি করেননি।  আধিকারিকরা মনে করছেন, পরিকল্পনা করেই এটি করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল, তদন্ত প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করা। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকরা দেহ দেখার পর কেউই পুলিসকে স্টেটমেন্ট দিতে রাজি হননি। যে কারণে পুলিসকে হাসপাতালের অভিযোগের উপর এতক্ষণ নির্ভর করতে হয়েছিল। 

    পাশাপাশি চতুর্থ ব্যাটালিয়নের এএসআই অনুপবাবুর কাছে তদম্তকারীরা জানতে চান অভিযুক্ত সিভিকের কাছ থেকে ভোরবেলা ঘটনা জানার পরেও পুলিসকে কেন জানালেন না? এই প্রশ্নে তিনি বিভিন্ন রকম উত্তর দিতে থাকেন। সঞ্জয়কে কেন তিনি আশ্রয় দিলেন, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ওই পুলিস কর্মী। অভিযোগ, সঞ্জয়ের জামাকাপড় ধুয়ে দিতেও তিনি সাহায্য করেন। এই নিয়ে অসঙ্গতি থাকায় তাঁর পলিগ্রাফ করানো হয়। এদিন সিবিআইয়ের টিম তরুণীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। শ্মশানঘাট থেকে ডেথ সার্টিফিকেট কেন অন্য কেউ নিলেন, সেটাও তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।      
  • Link to this news (বর্তমান)