শিয়ালদহ শাখা: বিক্ষোভে অনেক ট্রেন লেট-বাতিল, দুর্ভোগে একাধিক রুটের যাত্রী
বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: রাজা রামমোহন ডোম। পেশায় শ্রমিক। বাড়ি মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে। কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরবেন বলে বুধবার সকাল ৯টায় এসেছিলেন শিয়ালদহ স্টেশনে। তাঁর ট্রেন ছিল সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে। ‘লালগোলা মেমো’। কিন্তু, সেই ট্রেন বাতিল! মাথায় হাত তাঁর। কারণ, পরের ট্রেন দুপুর ২টোয়! অপেক্ষা করতে হবে পাঁচ ঘণ্টা! বসে পড়লেন প্ল্যাটফর্মের উপরেই। হাতে ঘড়ি নেই। পকেটে কিপ্যাড ফোন। তাতেই সময় দেখছেন বারবার। বললেন, ‘খুব দুর্ভোগে পড়লাম। জানি না, আজ বাড়ি ফিরতে পারব কি না’!
শুধু একটি ট্রেন বাতিল নয়। শিয়ালদহ শাখায় এদিন বিভিন্ন রুটের বাতিল লোকাল ট্রেনের সংখ্যা প্রায় ৯০টি। এখানেই শেষ নয়। কোথাও রেললাইনের উপর বিক্ষোভ, কোথাও আবার চলেছে অবরোধ। কোথাও ওভারহেড লাইনের উপর ফেলা হয়েছে কলাপাতা। তার জেরে বহু ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন স্টেশনে। স্বাভাবিকভাবেই সেগুলি দেরিতে ঢুকেছে শিয়ালদহে। তাতে হাজার হাজার মানুষ সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। আবার যে ট্রেনগুলি শিয়ালদহ থেকে ছেড়েছিল, সেগুলি বিক্ষোভ, অবরোধে আটকে পড়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়। সব মিলিয়ে বন্ধের দিন রামমোহনবাবুর মতো শিয়ালদহ শাখায় দুর্ভোগের শিকার হন একাধিক রুটের যাত্রী। রেল সূত্রে খবর, সকাল থেকে যাত্রীদের দুর্ভোগ হলেও বেলা ১১টা পর বিভিন্ন রুটে স্বাভাবিক হতে শুরু করে ট্রেন চলাচল। এদিন অফিস টাইমে শিয়ালদহ স্টেশনে চেনা ভিড় ছিল না। তবে, স্টেশন থেকে যাওয়ার জন্য অন্যান্য দিনের মতো পর্যাপ্ত বাস, অটো, ট্যাক্সি সবই ছিল।
এদিন ট্রেনে চেপে কল্যাণী থেকে কলকাতায় আসেন তরুণ পাল। তিনি বলেন, ‘১০টা ৪৬ মিনিটে ট্রেনের শিয়ালদহে ঢোকার কথা ছিল। পৌঁছল বেলা ১১টা ১৯ মিনিটে’। শিয়ালদহ স্টেশনে এক আত্মীয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সঞ্জয় দেবনাথ। বেলা ১১টার সময় স্টেশনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘কৃষ্ণনগর থেকে ওই আত্মীয় আসবেন। শিয়ালদহে ৯টা ২২ মিনিটে আসার কথা। তাঁকে এই মাত্র ফোন করেছিলাম, শুনলাম ১০টা ৫৪ মিনিটে কাঁকিনাড়া স্টেশন ছেড়েছে। শিয়ালদহে কখন আসবে, জানি না!