• টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ, ধুন্ধুমার, তবু বনধে সাড়া দিল না সাধারণ মানুষ
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: আর জি করে ইস্যুতে বুধবার ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। তবে বারাসত থেকে বনগাঁ কিংবা বসিরহাট এই তিন মহকুমায় বনধের কোনও প্রভাবই পড়ল না। প্রভাব পড়েনি কল্যাণী সহ শহরতলিতে। সকালে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া স্বাভাবিক ছিল জনজীবন। সাধারণ মানুষ থেকে নিত্যযাত্রীরা কার্যত প্রত্যাখ্যান করেছেন বনধকে। যদিও গেরুয়া শিবিরের দাবি, তৃণমূল বনধকে বানচাল করেছে। মানুষের যথেষ্টই সাড়া ছিল।

    বুধবার সকালে বারাসত স্টেশনে রেল অবরোধ করে বিজেপি। পুলিস তাদের হটিয়ে দেয়। এরপর বিজেপি নেতারা চাঁপাডালি মোড়ে হম্বিতম্বি শুরু করে। গাড়ি থামিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। বনধ ব্যর্থ করতে আসরে নামে তৃণমূল। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে মারধরের ঘটনাও ঘটে চাঁপাডালি মোড়ে। পুলিস পরিস্থিতি সামাল দেয়। বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষ সহ বেশ কয়েকজন নেতাকে আটক করে বারাসত থানার পুলিস। এদিকে কদম্বগাছি, গোবরডাঙা সহ বিভিন্ন স্টেশনে পথ অবরোধ করে বিজেপি নেতা-কর্মীরা। অশোকনগর ও হাবড়াতে বনধের সমর্থনে পথে নামে বিজেপি। দেগঙ্গায় মিছিল করছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। 

    বনধে মিশ্র প্রভাব পড়েছে বনগাঁ শহরে। বাজার, দোকানপাট খোলা থাকলেও সকালের দিকে বনগাঁ-শিয়ালদহ ও বনগাঁ-রানাঘাট শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা রেললাইন অবরোধ করে। বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায়। শহরের যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। দোকানপাট খোলা ছিল। বনধের কোনও প্রভাব পড়েনি পেট্রাপোল সীমান্তে। 

    বসিরহাট মহকুমাও স্বাভাবিক ছিল। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ বসিরহাটের ভ্যাবলা স্টেশনে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা হাসনাবাদ শিয়ালদাগামী ট্রেন অবরোধ করে। বসিরহাট থানার পুলিস ও রেল পুলিসের আধিকারিকরা ১০ মিনিটের মধ্যে পরিস্থিতির সামাল দেয়। হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি একাধিক জায়গায় বনধের তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। বেলা ১২টা নাগাদ বসিরহাট বোটঘাট সংলগ্ন এলাকায় বিজেপি সমর্থক ও তৃণমূল সমর্থকদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। 

    কল্যাণী মহকুমা এলাকায় জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। দোকানপাট সর্বত্র খোলা ছিল। বিজেপি কিছু জায়গায় অবরোধ করতে গেল পুলিস বাধা দেয়। তাতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কল্যাণী রেল স্টেশনের কাছে ৪১ নম্বর রেলগেটে রেললাইনের উপর টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয়। দাঁড়িয়ে যায় মুর্শিদাবাদগামী হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস। কল্যাণী এইমস সংলগ্ন রাজ্য সড়কে গয়েশপুর চেক পোস্ট মোড়েও কিছু সময় অবরোধ করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। চাকদহ ব্লকের বিষ্ণুপুরেও বন্ধ সমর্থকেরা কয়েকটি রুটের যাত্রী বোঝাই বাস আটকে দেয় কিছু সময়ের জন্য। পাল্টা তৃণমূলের তরফ থেকেও বনধকে ব্যর্থ করতে মিছিল করা হয় কল্যাণী, হরিণঘাটা, চাকদহের বিভিন্ন জায়গায়।

    এদিন সকালে বিরাটি স্টেশন ও বেলঘরিয়া স্টেশনে কিছু সময় ট্রেন অবরোধ করেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা, পরে পুলিস তাঁদের সরিয়ে দেয়। এরপর তৃণমূল কর্মীরা রাস্তায় নামলে উত্তেজনা তৈরি হয়। বরানগর, সোদপুর সহ বেশ কিছু জায়গায় বনধের সমর্থনে হাতে গোনা বিজেপি কর্মী রাস্তায় নামলেও তেমন ছাপ ফেলতে পারেনি। সকাল থেকে বরানগর বাজার, দক্ষিণ দমদম থেকে শুরু করে কামারহাটি, খড়দহ সহ বিভিন্ন জায়গায় বাজার-ঘাট স্বাভাবিক ছিল। তবে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় কম ছিল। বাস ও অটো অনেক ফাঁকা ছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)