• রেলপথে হাঙ্গামা বিজেপির পুলিসের লাঠি-টিয়ার গ্যাস
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হুগলির জেলায় বন্‌ধের সার্বিক কোনও প্রভাব না পড়লেও রেলপথে ব্যাপক হাঙ্গামা চালাল পদ্মবাহিনী। ঘটনার জেরে দুপুর পর্যন্ত হাওড়া-ব্যান্ডেল, বর্ধমান ও কাটোয়া শাখায় যাতায়াত বিঘ্নিত হয়েছে। নিত্যযাত্রী থেকে অফিস কর্মী, স্কুল, কলেজ পড়ুয়াদের চূড়ান্ত ভোগান্তি হয়েছে। হুগলির একাধিক রেলস্টেশনে পদ্মপার্টির জঙ্গি-অবরোধ তুলতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছে পুলিস। পরিস্থিতি সামাল দিতে মানকুণ্ডু সহ একাধিক স্টেশনে পুলিসকে লাঠিচার্জ করতে হয়। অভিযোগ, মানকুণ্ডুতে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটিয়েছে পুলিস। হিন্দমোটর ও উত্তরপাড়া স্টেশনে অবরোধকারী বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কলকাতা যেতে বাধা পাওয়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সবমিলিয়ে ত্রিবেণী থেকে উত্তরপাড়া, পাণ্ডুয়া, মানকুণ্ডু, সর্বত্র রেলপথে ধুন্ধুমার হয়েছে।

    রেলপথে তাণ্ডব চালিয়ে জনজীবন প্রভাবিত করতে চাইলেও হুগলির সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এদিন বন্‌঩ধের প্রভাব পড়েনি। হুগলির শহর থেকে গ্রাম প্রায় প্রতিটি বাজার রাত পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। স্কুল, কলেজ, অফিস কাছারিতেও ভিড় দেখা গিয়েছে। হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি স্কুলে জোর করে বন্‌ধ করাতে চাইলে অভিভাবকরা রুখে দাঁড়ান। হাসাপাতাল থেকে পুরসভাগুলিতে পরিষেবা ছিল স্বাভাবিক। রেলপথকে কেন্দ্র করে বিজেপির জঙ্গি আন্দোলনের সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা চেয়ারম্যান অসীমা পাত্র। তিনি বলেন, জনসমর্থন না পেয়ে হুগলির ‘লাইফলাইন’ লোকাল ট্রেন রুখে দিয়ে বন্‌ধ সফলের চক্রান্ত করেছিল বিজেপি। মানুষ অনেক জায়গাতেই প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের রেল দপ্তরের কোনও পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। আমাদের ছাত্র ভাইবোনদের কলকাতা যাত্রা রুখে দিতে চন্দননগর ও হিন্দমোটরে পরিকল্পিত হামলা করা হয়েছে। চন্দননগরে দু’জন ছাত্রীকে মারধর করা হয়েছে। বিজেপির রাজ্যনেতা স্বপন পাল ও জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, একাধিক রেলস্টেশনে যাত্রীরা নেমে এসে আমাদের সঙ্গে অবরোধে শামিল হয়েছেন। কোথাও পুলিস কোথাও বা তৃণমূলীরা সরাসরি আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা করেছে। জেলাজুড়ে একাধিক কর্মী জখম হয়ে চিকিৎসাধীন হয়েছে। কিন্তু বন্‌ধ সফল হয়েছে। হুগলি গ্রামীণ ও কমিশনাটের পুলিস জানিয়েছে, সর্বত্র আইনের শাসন বজায় রাখার প্রয়াস করা হয়েছে।

    বন্‌঩ধের দিন সকালে হুগলির ত্রিবেণী সহ একাধিক স্টেশন সামান্য সময়ের জন্য রেল অবরোধ করেছিল পদ্মপার্টি। একাধিক স্টেশনে পুলিসের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁরা অবরোধ তুলেও নেয়। কিন্তু সকাল ন’টার পর থেকে রেলপথে জঙ্গি-অবরোধের রাস্তায় নেমে পড়ে গেরুয়াবাহিনী। এরপর দ্রুত কখনও পুলিসের সঙ্গে কখনও তৃণমূল বা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মীদের সঙ্গে বন্‌ধ সমর্থকদের সংঘর্ষ বেধে যায়। সকাল ১০টা নাগাদ হিন্দমোটরে বন্‌ধ সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে একপ্রস্ত সংঘর্ষের পরে মানকুণ্ডু স্টেশনে তীব্র হাঙ্গামা বেধে যায়। সেখানে পরিস্থিতি সামাল দিতে অবরোধকারীদের উপরে পুলিস লাঠিচার্জ করে। পরে টিয়ার গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। একই সময়ে বৈদ্যবাটি সহ একাধিক স্টেশনে হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি সমর্থকরা। তাতে হুগলির নিত্যযাত্রীদের তীব্র সমস্যায় পড়তে হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)