এই সময়: আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ঘনিষ্ঠ এএসআই অনুপ দত্তের পলিগ্রাফ টেস্ট করালো সিবিআই। সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতে আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই অনুমতি পাওয়ার পরেই বুধবার তাঁর পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হয় বলে সূত্রের খবর।গত বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথমবার তলব করা হয়েছিল অনুপকে। কিন্তু, বেশ কিছু প্রশ্নের সদুত্তর দেননি অনুপ। এমনকী সংবাদ মাধ্যমকে সেখানে দেখতে পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান তিনি। এরপরেও একাধিকবার তলব করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, অনুপের সৌজন্যেই কলকাতা পুলিশের কর্মী সংগঠনের বাইক ব্যবহার থেকে শুরু করে পুলিশের জন্য নির্দিষ্ট ব্যারাকে সঞ্জয় থাকার সুযোগ পেয়েছিল।
তবে, সঞ্জয়ের প্রতি তার এত স্নেহ কেন ছিল সে বিষয়ে জানতে চাইলে সব প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি। যা থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা হয়, কিছু তথ্য আড়াল করতে চাইছেন অনুপ। বুধবার তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত তলব করা হয়েছিল প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং নার্সিং স্টাফদের।
পাশাপাশি, এদিন কলকাতা পুলিশের কয়েকজন অফিসারের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারীরা। আবার, আরজি করের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্তে এদিন আরজি কর হাসপাতালে যান সিবিআইয়ের অফিসাররা। হাসপাতালের ৩ জন আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সংগ্রহ করা হয় বেশ কিছু নথিও।
যদিও নির্যাতিতা তরুণীর পরিবার সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে খুশি নন। মেয়ের নৃশংস হত্যার পরে ২০ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র একজন গ্রেপ্তার হওয়ায় অসন্তুষ্ট তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে এদিন সিবিআইয়ের উপর তদন্তে আরও সক্রিয়তা বাড়ানোর আবেদন করেছেন মৃতার পরিবার। বাড়ির সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা বলেন, ‘আমরাও চাই সবাই সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়াক। তাড়াতাড়ি ঘটনার বিহিত করার আবেদন জানিয়েছি। সিবিআই তাদের সুনাম অনুযায়ী কাজ করুক।’
এদিন সকালে সিবিআইয়ের দুই মহিলা আধিকারিক সোদপুরে তরুণী চিকিৎসকের বাড়িতে যান। বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কথা বলার পরে ফিরে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। যা ক্ষমতা রয়েছে, তার মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা তাঁরা করছেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা তাঁদের জানিয়েছেন বলে এদিন দাবি করেন মৃতার মা।
তরুণী চিকিৎসকের বাবার বক্তব্য,‘প্রথমে পুলিশের উপর ভরসা করেছিলাম। কিন্তু দু-তিন দিন পরে হতাশ হয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তি চাই।’