• Exclusive: নির্যাতিতার শবদাহ সার্টিফিকেট VIRAL, সই করা ওই সঞ্জীব পুলিশের লোক? সত্যিটা খুঁজল bangla.aajtak.in
    আজ তক | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (RG Kar Medical College) তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। সিবিআই এখনও পর্যন্ত নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করেনি। সূত্রের খবর, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনেরই জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে সিবিআই। নির্যাতিতা চিকিৎসকের শেষকৃত্য হয় পানিহাটি শ্মশানে। তবে অভিযোগ, দ্রুততার সঙ্গে নির্যাতিতার দেহ দাহ করানো হয় পলিশের উপস্থিতিতে। শ্মশানে বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং স্থানীয় নেতাদের ভিড় ছিল। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষও। দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দ্রুত সৎকার করা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব নির্যাতিতার পরিবার। এ নিয়ে বিরোধীরাও সরব হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, দেহ দ্রুততার সঙ্গে দাহ করে সরকার অনেক কিছু ধামাচাপা দিয়েছে। যার কারণে এই তদন্তে সমস্যা হচ্ছে সিবিআই-র।

    এহেন যাবতীয় ঘটনাক্রমের মধ্যেই নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল ভাইরাল হওয়া একটি বার্নিং সার্টিফিকেট নিয়ে। গত কয়েকদিন ধরেই একটি বার্নিং সার্টিফিকেট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। সেই ঘাট সার্টিফিকেটে সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় নামে একজনের স্বাক্ষর (সংবাদদাতার নাম) রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করছেন, এই সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় পুলিশকর্মী। যে সময় ঘটনাটি ঘটে, সেই সময় আরজি কর ফাঁড়ির ওসি পদে ছিলেন সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ, তিনিই সই করেছিলেন।

    যদিও bangla.ajtak.in-কে নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'সঞ্জীব মুখোপাধ্য়ায় আমার প্রতিবেশী এবং ভাইয়ের মতো। সঞ্জীব রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কি না তা আমি বলতে পারব না। উনিই এফআইআর এবং শ্মশানের সার্টিফিকেটে সই করেছেন। পরিবারের সদস্যের মতো, তাই চিন্তার কিছু নেই। উনি আমার ভাইয়ের মতো। আমরা ৪০ বছর একে অপরকে চিনি। আমার মেয়েকে নিজের মেয়ের মতোই মনে করতেন।'

    bangla.ajtak.in এরপর কথা বলেছিল সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। পেশায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র সঞ্জীব বর্তমানে কর্মসূত্রে বিহারে রয়েছেন। অভিযোগ ও গুজব নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি। সঞ্জীব বলেন, 'ওইদিন শ্মশানে অনেক লোক ছিল। পুলিশের লোকও ছিল। প্রথমে আমি ওর বাবা ও মাকে সামলাতেই ব্যস্ত ছিলাম। এফআইআর করা, আরও কাজগপত্রের কাজ ছিল সেগুলো করেছি। শ্মশানে আসার পরে ফর্ম ভরার কাজ করা হয়েছে। পুলিশের লোক, বিধায়ক, কাউন্সিলর ছিলেন।' 

    দ্রুততার সঙ্গে দাহ করার অভিযোগের বিষয়ে সঞ্জীববাবু বলেন, 'আরজি করে আমাদের অনেক সময় লেগেছিল। মৃতদেহ দেখাতে ওরা অনেক সময় নিয়েছিল। ডাক্তারবাবু, কিছু আন্দোলনকারী পড়ুয়া, ডাক্তার ছাত্র ছাত্রীরা ও পুলিশ প্রশাসন বলেছিলেন তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্ত করাতে হবে, না হলে অনেক প্রমাণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবও বললেন ময়নাতদন্ত করাতে হবে। ময়নাতদন্ত হওয়ার পরে দেহ বাড়ির সামনে ও বাড়িতে প্রায় এক দেড় ঘণ্টা রাখা হয়েছিল। বাড়ির দোতলাতেও তোলা হয়েছিল দেহ। পরে দেখছি সকলে বলছেন বেশি তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে একটু বেশি সময় লেগেছিল। পরে মনে হয়েছে সবকিছু তাড়াহুড়ো করে করা হয়েছে। তখন অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি। যদি তখন কেউ একটু বলত, তাহলে এখন যা শুনছি। যখন ওদের পরিবারের পাশে ছিলাম, তখন মনে হয়নি যে আমার নামে বদনাম হতে পারে, এতকিছু হতে পারে। আমি ছোটবেলা থেকে মেয়েটিকে দেখেছি। আমার মেয়ের সঙ্গে বড় হয়েছে। পরিবার আমার ৫০ বছরের পরিচিত। পাশাপাশি বাড়িতে থাকি প্রায় ২০ বছর। যা করেছি প্রতিবেশী হিসেবে। সেটাকে দেখলাম কাল থেকে ভাইরাল হয়েছে ঘাটের সার্টিফিকেটে আমার সই কেন, ওটা কেন ইত্যাদি। মেয়েটির বাবা মায়ের তখন ওই অবস্থা। সারাদিন ধকল ও কান্নাকাটিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁরা ওআরএস খাচ্ছিলেন। বাবাকে জিজ্ঞাসা করলে বলেছিলেন, আমি যেতে পারব না। তুই কর। পরের দিন সকালে কাগজপত্র দিয়েছিলাম। মেয়েটির বাবা বলেছিলেন আমার কাছেই রাখতে। এখন দেখছি এসব নিয়ে অপ্রচার চলছে।'

    আপনার সঙ্গে কি পুলিশের যোগাযোগ আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জীব বলেন, 'প্রথম কথা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবেটা কী করে, আমি তো বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকি। এখন আমি বিহারে রয়েছি। মাসে অর্ধেকদিন আমাকে বাইরে থাকতে হয়। আমি কে যে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে। এর তো কোনও কারণ থাকবে, সেই কারণটা কী?'
  • Link to this news (আজ তক)