• সংসারের চাকা সচল রাখতে টোটো নিয়ে আরামবাগ চষে বেড়ান ২৪ বছরের মৌ
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আরামবাগ: সংসার চাকা সচল রাখতে টোটো চালাচ্ছেন ২৪ বছরের যুবতী মৌ মালিক। পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সকাল থেকে রাত্রি সওয়ারি নিয়ে ছুটছেন মৌ। তাঁর এই সৎ ও সাহসী প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আরামবাগের বলরামপুরের বাসিন্দা মৌয়ের বাবা সংসার ছেড়েছেন। মাকে নিয়ে দিদিমার সঙ্গে থাকেন মৌ। তাঁর মা একটি স্কুলে রান্নার কাজ করেন। কিন্তু সেই আয় সংসার চালানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। তার উপর রয়েছে দিদিমার ওষুধের খরচ। যা অনেকটাই বেশি। উপায়ন্তর না দেখে ২০১৯ সাল থেকে দৈনিক ২০০ টাকার চুক্তিতে একজনের টোটো ভাড়া নিয়ে চালাতে শুরু করেন মৌ। পরণে জিন্স, টপ। গলায় হেডফোন, হাতে স্মার্টফোন মৌকে সবাই স্মার্ট টোটো দিদি বলেই চেনেন। সওয়ারি মিলুক আর নাই মিলুক, টোটোর মালিককে দৈনিক ২০০ টাকা গুনে দিতে হয় মৌকে। তারপর যতটুকু টাকা পড়ে থাকে সেটাই মৌয়ের রোজগার। সকাল আটটার সময়ে বাড়ি থেকে টোটো নিয়ে বের হন মৌ। আরামবাগ শহরের অলিতে গলিতে টোটো নিয়ে যাত্রী তোলেন তিনি। দুপুরে বাড়িতে খেতে চলে যান। এরপর বিকেল পাঁচটা থেকে সাড়ে আটটা অব্দি আবার টোটো চালানো। তবে আগে যেমন রোজগার হতো এখন আর তা হয় না বলেই দাবি মৌয়ের। এখন প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া হয়। মালিককে দিয়েথুয়ে রয়েছে টোটো মেরামতের খরচ। 

    এমত অবস্থায় বেশ কষ্টেই দিনযাপন করছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে মৌয়ের বক্তব্য, নারীরা এখন পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে পারে। আমি টোটো চালানোকে আমার জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছি। পুরুক টোটো চালকরা আমার সঙ্গে খুবই ভালো ব্যবহার করেন। তবে আগের মতো এখন টোটো চালিয়ে তেমন লাভ হয় না। তবুও পেটের তাগিদে আমাকে এই পেশাকে চালিয়ে যেতেই হবে। যদি কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার আমায় একটা টোটো দিয়ে সাহায্য করেন তাহলে খুবই উপকৃত হই। এ প্রসঙ্গে আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভান্ডারী বলেন, এখন মেয়েরাও কোনও কাজে ছেলেদের থেকে পিছিয়ে নেই। আমরা মৌকে নিয়ে সত্যিই গর্ববোধ করছি।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)