• বন্‌ধ ঘিরে বিক্ষিপ্ত অশান্তি ৩ জেলায়, ময়না কলেজে পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে ইট
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম: বন্‌ধ সফল করার নামে বিজেপি কর্মীদের হুজ্জুতি ঘিরে ব্যাপক অশান্তি ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরে। তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে বিজেপির ডাকা বন্‌ধে সেভাবে প্রভাব পড়ল না। বন্‌ধ পালনের নামে জোর করে দোকানপাট বন্ধ, রাস্তা অবরোধের ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরে ৯০জন বিজেপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। একাধিক জায়গায় বন্‌ধ সফল ও বন্‌ধ ব্যর্থ করার জন্য বিজেপি ও তৃণমূলের মিছিল মুখোমুখি হয়। কোথাও কোথাও হাতাহাতিও হয়েছে। বন্‌ধ সমর্থকদের টার্গেট ছিল টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে কলকাতায় যাওয়া বাস। তার জেরেও ঝামেলা তৈরি হয়। 

    পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নাজিরবাজারে বিজেপি কর্মীরা ১১৬বি জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। সেই সময় দু’টি সরকারি বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে একটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। অপর বাসের সামনের কাচ ভেঙে দেয় বন্‌ধ সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিস লাঠিচার্জ করে। তাতে কয়েকজন বিজেপি কর্মী জখম হন। খেজুরি-৫ মণ্ডল সভাপতি তপন মাইতি সহ সাতজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। এছাড়া, নন্দীগ্রাম-২ব্লকের রেয়াপাড়ায় বিজেপির অবরোধ সরাতে গিয়ে পুলিস লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এদিন জেলায় বেসরকারি বাস চলাচল করেনি।

    ময়না কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। তখন বিজেপি কর্মীরা তাঁদের তাড়া করে। টিএমসিপির ব্যানার ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। বন্‌ধ ঘিরে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায় তমলুক থানার কাঁকটিয়া বাজারে। বিজেপি কাঁকটিয়ায় রাস্তা অবরোধ করে। পাল্টা দোকানপাট, হাটবাজার স্বাভাবিক রাখার জন্য মিছিল করে তৃণমূল। দু’দল মুখোমুখি হতেই মারামারি শুরু হয়ে যায়। মেচেদা থেকে তমলুকে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে কাঁকটিয়ায় একটি গাড়িতে ভাঙচুর করে বন্‌ধ সমর্থকরা। বন্‌ধ ঘিরে কোলাঘাট থানার হলদিয়া মোড়েও উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপি অবরোধ করায় কলকাতায় যাওয়ার পথে টিএমসিপির কয়েকটি বাস আটকে পড়ে। বাস থেকে টিএমসিপির সদস্যরা নামতেই তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিস দু’পক্ষকে সংযত করে সেইসব বাস বের করে দেয়। বন্‌ধে বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরেও। মেদিনীপুর শহরে বিজেপির কার্যালয় থেকে বন্‌ধের সমর্থনে মিছিল বের করতেই বাধা দেয় পুলিস। 

    দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখান থেকে প্রায় ৩০জনকে আটক করে পুলিস। মেদিনীপুর শহরে গোলাপিচক এলাকায় বন্‌ধ সমর্থকরা একটি বাসে ভাঙচুর চালান। বেলদায় একটি যাত্রীবাহী বাসকে আটকানোর চেষ্টা হলে পুলিস তিনজনকে আটক করে। বেলদা-কাঁথি সড়ক অবরোধ করার সময় বন্‌ধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিসের ঝামেলা হয়। কেশিয়াড়ি থানার খাজরা এলাকায় দোকান খোলাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের ঘটনায় পুলিস দু’জনকে আটক করে। খড়্গপুর স্টেশনে পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের সামনে বন্‌ধ সমর্থকরা বসে পড়েন। পুরসভার দুই কাউন্সিলার সহ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে আটক করে জিরআপি। 

    এদিন বন্‌ধ সমর্থকরা ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে গৌরা, কলোড়া, খুকুড়দহ সহ বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করেন। যদিও পুলিস গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। দাসপুর-২বিডিও অফিস জোর করে বন্ধ করতে গেলে ১০জন বিজেপি নেতা-কর্মীকে পুলিস আটক করে। ঘাটাল শহরে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে বিধায়ক শীতল কপাট সহ বিজেপি নেতা-নেত্রীদের আটক করে কেশপুর নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।

    ঝাড়গ্ৰাম জেলায় সরকারি বাস চললেও রাস্তায় বেসরকারি বাস ছিল না। সকালে ঝাড়গ্রাম শহরে বিজেপি কর্মীরা জোর করে দোকান বন্ধ করে দেন।  তৃণমূল এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ( নন্দীগ্রামে বন্‌ধ সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিসের পুলিসের খণ্ডযুদ্ধ। নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)