• মহিলা কনস্টেবলকে কামড় বিজেপি নেত্রীর
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: বন্‌ধ সফল করার ব্যর্থ চেষ্টা। জবরদস্তি, আস্ফালন এবং হুমকি দিয়েও সাধারণ মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখতে পারল না বিজেপি। দলের নেতা ও কর্মীরা সকালে আদাজল খেয়ে মাঠে নামলেও বেলা গড়াতেই স্বাভাবিক ছন্দেই এগতে লাগল জনজীবন। তবে, ছি ছি রব উঠেছে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক ফাল্গুনী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। 

    রায়গঞ্জ শহরে এক মহিলা কনস্টেবল বন্‌ধ সমর্থকদের রাস্তা থেকে সরাতে গেলে তাঁর হাতেই কামড় বসিয়ে দেন ফাল্গুনী। এক মহিলা চিকিৎসকের উপর নির্যাতনের সুবিচার চাইতে নেমে আরেক মহিলাকে কীভাবে কেউ আক্রমণ করতে পারেন, তা নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তাঁর কথায়, বিজেপি বিচার চাইতে রাস্তায় নামছে না। তার বদলে চক্রান্ত করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করাই তাদের উদ্দেশ্য। একজন মহিলা নেত্রী আন্দোলনের নামে হিংসাত্মক কার্যকলাপ করছেন। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে না গেলে কেউ এমন করতে পারেন না। 

    সকালে রায়গঞ্জ শহরের পুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রেলগেটে জোর করে বিক্ষোভ করার জন্য রাস্তায় নেমেছিলেন হাতে গোনা বিজেপি নেতা ও কর্মী। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার। তাঁরা জোর করে যানচলাচল স্তব্ধ করার চেষ্টা চালান। এতে বাধা দেন রায়গঞ্জ থানার মহিলা কনস্টেবলরা। তাতেই রেগে অগ্নিশর্মা ফাল্গুনী চক্রবর্তী। তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে সরাতে গেলে আচমকাই কামড় বসিয়ে দেন এক মহিলা কনস্টেবলের হাতে। মুহূর্তে ওই বেনজির দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়ে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

    ফাল্গুনী বলেন, আজকের বন্‌঩ধে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিলেন। সেটা দেখেই রায়গঞ্জ থানার পুলিস অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। তখনই আত্মরক্ষার জন্য আবেগের বশে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, তদন্ত চলছে। 

    এদিন সকাল থেকেই জনাদশেক বিজেপি নেতা, কর্মী জোর করে বন্‌ধ সফল করার চেষ্টা করেন। দোকানদার, গাড়ি চালকদের আঙুল উঁচিয়ে হুমকিও দিচ্ছিলেন কয়েকজন। ব্যাঙ্ক, বেসরকারি অফিসে ঢুকে কাজ বন্ধ করতে বলেন তাঁরা। সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েন টোটো চালকরা। তাঁদের টোটোর চাবিও কেড়ে নেন বন্‌ধ সমর্থকরা। টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তায় বাঁশ রেখে অবরোধের চেষ্টা চালায় বিজেপি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ সরিয়ে দেয়।

    বিজেপি এতটা আক্রমণাত্মক হওয়ার পরও জেলার স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত, বাজার এদিন স্বাভাবিকই ছিল। মোহনবাটি, দেবীনগর, বন্দর, স্টেশন বাজারে অন্যদিনের মতোই ভিড় দেখা গিয়েছে। রায়গঞ্জের পুলিস সুপার সানা আখতার বলেন, বন্‌ধকে কেন্দ্র করে ৩৮ জনকে আটক করা হ঩য়েছে। ইসলামপুরেও দু’জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিস জানিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)