• বন্‌ধ ঘিরে শিলিগুড়িতে বিজেপির জুলুমবাজি, প্রতিবাদ মিছিল মেয়র-ডেপুটি মেয়রের
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বিজেপির বন্‌ধ ঘিরে জুলুমবাজি শিলিগুড়িতে! বুধবার কোথাও সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়। কোথাও স্কুলবাস থামিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। আবার কোথাও জোর করে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিস বন্ধ করা হয়। শুধু তাই নয়, টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল চলে। সেসঙ্গে ছিল বাইক বাহিনীর দাপাদাপি। পুলিসের সঙ্গেও বাকবিতণ্ডায় জড়ান বন্‌ধ সমর্থকরা। পুলিস শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ১৬ জন বন্‌ধ সমর্থককে আটক করে। এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আমআদমিকে ভরসা জোগান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব ও ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার। তাঁদের অভিযোগ, লাঠি হাতে ভয় দেখিয়ে, জোর করে বন্‌ধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ পদ্ম বাহিনী। যদিও, বিজেপি অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বনধ্‌ সফল করেছে। শহরের রাজনীতিতে এনিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

    ১২ ঘণ্টা বাংলা বন্‌঩ধের সমর্থনে এদিন সকালেই শিলিগুড়ির রাস্তায় নামেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ঝান্ডা হাতে কয়েকজন বন্‌ধ সমর্থক গুরুংবস্তির কাছে এনবিএসটিসির বাসে হামলা চালান বলে অভিযোগ। বাসের সামনের কাচ ভেঙে দেয়। পাশেই জংশনে এনবিএসটিসির গেটে তালা ঝোলানোর চেষ্টা করেন। সেখান থেকে পুলিস আটজনকে আটক করে। ঝঙ্কার মোড়ের কাছেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। সেখানে কোচবিহার-শিলিগুড়ি রুটের একটি সরকারি বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এতে বাসের সামনের কাচ ভেঙে যায়। 

    এমনকী, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে হিলকার্ট রোডে একটি বেসরকারি কলেজের বাস থামান বন্‌ধ সমর্থকরা। বাস থেকে পড়ুয়াদের নামিয়ে দেওয়া হয়। সেভক মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বন্‌ধ সমর্থকরা। ঝান্ডা হাতে বিধান মার্কেটে ধমকে, চমকে ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ করা হয় বলে অভিযোগ। জোর করে পোস্ট অফিস বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। মাটিগাড়ার খাপরাইল মোড়ে চিকিৎসক সহ সাধারণ মানুষের গাড়ি থামান বন্‌ধ সমর্থকরা। এখানে একটি গাড়ির শোরুম জোর করে বন্ধ করা হয়। নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক আনন্দময় বর্মন। এখানেই পুলিসের সঙ্গে বিধায়কের বচসা হয়। দুপুরের পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে জোর করে পোস্ট অফিস বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। 

    হিলকার্ট রোড, বর্ধমান রোড সহ সর্বত্র চলে বাইক বাহিনীর দাপট। স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ধমকে সব্জির দোকান বন্ধ করা হয়। টোটোচালকদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় শহরের রাস্তায় নামেন মেয়র ও ডেপুটি মেয়র। তাঁদের সঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী সহ সমস্ত মেয়র পরিষদ সদস্য ও তৃণমূল কাউন্সিলাররা ছিলেন। তাঁরা মিছিল করে পোস্ট অফিস ও বাজার খুলেছেন। বিধাননগরে বন্‌঩ধ বিরোধী মিছিলের নেতৃত্ব দেন তৃণমূল নেতা কাজল ঘোষ। পুরসভা, মহকুমা পরিষদ, মহকুমা শাসকের অফিস সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও আদালত সচল ছিল। পুরসভা ও মহকুমা পরিষদে কর্মচারীর হাজিরা ছিল প্রায় ১০০ শতাংশ।

    মেয়র বলেন, বন্‌ধ ব্যর্থ। বাজার, হাট, সরকারি অফিস, আদালত সচল ছিল। ডেপুটি মেয়র বলেন, জুলুমবাজি করেও বন্‌ধ সফল করতে পারেনি বিজেপি। যদিও বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, কোথাও জোর করে বন্‌ধ করা হয়নি। পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল চেষ্টা করেও বন্‌ধ ভাঙতে পারেনি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্‌ধ সফল করেছে। (বনধ ব্যর্থ করতে শিলিগুড়িতে গৌতম দেবের নেতৃত্বে তৃণমূলের মিছিল।-নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)