• রাত দুটোয় জমিতে নিয়ে যেত কাজ করাতে, কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল, পঞ্জাব থেকে উদ্ধার জলপাইগুড়ির ৪ যুবক
    ২৪ ঘন্টা | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • প্রদ্যুত্ দাস: কৃষি জমিতে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে পাঞ্জাবের অমৃতসরে নিয়ে গিয়ে ক্রীতদাসের মতো করে রাখা‌ হয়েছিল চা বাগানের ৪ শ্রমিক যুবককে। দীর্ঘ তিনমাস ধরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গভীর রাতে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় এক যুবক। তার‌ কাছ থেকে সমস্ত বিষয় জানার পর বাকি ৩ যুবককে উদ্ধার করে আনেন চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের নেতারা। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের‌ ঘটনা।

    চারজন মিলে গভীর রাতে একবার পালানোর চেষ্টা করে তাঁরা। যদিও করণ মুন্ডা ছাড়া বাকি তিনজন ধরা পড়ে যায়। করণ জানায়, রাত ২টার সময় তাঁদের ঘুম থেকে তুলে দেওয়া হতো। অন্ধকারের মধ্যেই জমিতে নিয়ে যাওয়া হতো কাজের জন্য। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো মাসে মাত্র একদিন। তাও মালিকের ফোনে এক থেকে দুই মিনিটের বেশি কথা বলতে পারতো না তাঁরা। মালিকের শেখানো বুলি বলতে হতো বাড়িতে। তা‌ না হলে ফের অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। কার‌ও সঙ্গে কথা বলার কোনও সুযোগ ছিল না। এজন্য দিনরাত খেটে‌ চোখের জল ফেলতো সবাই।

    জলপাইগুড়ি  ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের চা মজদুর ইউনিয়নের নেতা বিষয়টি জানতে পেরে যোগাযোগ করেন জেলা শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে। পরে জেলা নেতারা দিল্লিতে সর্বভারতীয় নেতা কে হেমলতা ও সুদীপ দত্তর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা যোগাযোগ করেন পাঞ্জাবের শ্রমিক‌ নেতা কে চন্দ্রশেখরের সঙ্গে। অবশেষে তাঁদের সকলের সহযোগিতায় বিশাল মুন্ডা, শিবা মুন্ডা ও শঙ্কর মুন্ডাকে‌ উদ্ধার করে নিয়ে আসা‌ হয়েছে জলপাইগুড়িতে।

    চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের নেতা অরুণ ভূমিজ বলেন অনেক টানাপোড়েনের পর ঘরের ছেলেদের ঘরে ফিরিয়ে আনা‌ সম্ভব হয়েছে। নিজের সন্তানদের কাছে পেয়ে মা বাবাও আত্মহারা হয়ে ওঠেছেন। শ্রমিক নেতা অরুণ ভূমিজ বলেন, রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চা বাগানের এই যুবকদের উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মা বাবারা‌ দীর্ঘ সময় সন্তানদের‌ সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। তাই প্রচন্ড উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন‌ কাটছিল সবার‌। অবশেষে সকলের প্রাপ্য মজুরি ও কেড়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধার করে নিয়ে আসা‌ হয়।

    অপরদিকে অল ইন্ডিয়া প্লান্টার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর আলম বলেন রাজ্যে কাজ নেই। কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে যেতে বাধ্য হচ্ছে চা বাগানের ছেলে মেয়েরা। তারপর সেখানে গিয়ে সমস্যায় পরতে হচ্ছে এই মানুষ গুলোর। আমরা খুশি আটকে থাকা এই ছেলেদের আমরা পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দিতে পেরেছি।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)