রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য সঙ্গীতশিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ আগামী ১২ অক্টোবর। সেই উপলক্ষে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এবং শতবর্ষ কমিটি বছরভর একাধিক অনুষ্ঠান করছে। বুধবার শিল্পীর আর্কাইভ ও সংগ্রহশালার উদ্বোধন করা হল শান্তিনিকেতনে শিল্পীর বাসভবন ‘আনন্দধারা’-এ।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর, কল্পিকা মুখোপাধ্যায়, কণিকার ছোট বোন বিথীকা মুখোপাধ্যায়, মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়, এই আর্কাইভ গড়ে তোলার অন্যতম উদ্যোক্তা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী প্রিয়ম মুখোপাধ্যায় এবং ঋতপা ভট্টাচার্য। প্রসঙ্গত, আনন্দধারা বাড়িটিতে লতা মঙ্গেশকর, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, সুচিত্রা মিত্র, আমজাদ আলি খান, সত্যজিৎ রায়-সহ সঙ্গীত সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট গুণীজনেরা এসেছেন। সেই বাড়ির দু’টি কক্ষজুড়ে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আর্কাইভ ও সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে।
শিল্পীর ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সামগ্রী, তাঁর গানের জগৎ ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র, ছবি, বই, সম্মাননা ও মানপত্র রাখা হয়েছে আর্কাইভে। পাশাপাশি মিউজ়িয়ামে রাখা হয়েছে কণিকার ব্যবহৃত শাড়ি, বটুয়া, পানের বাটা, চশমা ইত্যাদি। এ ছাড়াও কণিকা ওরফে মোহর ও তাঁর পরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র, বিশিষ্টজনের চিঠিপত্র, তাঁর গানের খাতা, শান্তিনিকেতন আশ্রমের বিশিষ্টজনের সঙ্গে দুর্লভ ছবি, গানের রেকর্ড, যেসব চলচ্চিত্রে তিনি গান গেয়েছেন তাঁর পোস্টারও দেখতে পাওয়া যাবে সংগ্রহশালায়।
ঋতপা বলেন, “রবীন্দ্রনাথ এবং শান্তিনিকেতনের সঙ্গে বাংলার বাঙালির যে অনুভব জড়িত তার এক ক্ষণিক আস্বাদ পাওয়া যাবে এই আর্কাইভে। আমরা চাই, এটি পর্যটন মানচিত্রে স্থান পাক।”
কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট-এর সম্পাদক প্রিয়ম জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহে ছ’দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে এই মিউজ়িয়াম। ইতিমধ্যেই আনন্দধারা বাড়ির সামনের বেহাল রাস্তা এবং জল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদকে আবেদন করা হয়েছে। তারা নতুন রাস্তা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রিয়মের আশা, “মানুষের কাছে এটি একটি আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠবে।”