পিএম রিপোর্ট বদলাতে চাপ! MJN হাসপাতালের এমএসভিপির বিরুদ্ধে নালিশ
এই সময় | ২৯ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, কোচবিহার: একের পর এক হাসপাতালের বেনিয়মের ছবি সামনে আসতে শুরু করেছে। এ বার কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি (মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল) রাজীব প্রসাদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দপ্তরে বিস্ফোরক অভিযোগ জমা পড়েছে।পদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় রাজীব ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাইতেন বলে দাবি করেছেন ওই হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের প্রাক্তন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং বিভাগীয় প্রধান তন্ময় মহন্ত৷ এমনকী, মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন বিভাগীয় পরীক্ষাতেও রাজীব প্রভাব খাটাতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তন্ময় বর্তমানে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত৷
তাঁর অভিযোগ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁকে বদলি করেছিল একটি প্রভাবশালী চক্র। তাতে মদত দিয়েছিলেন রাজীব৷ চিঠিতে তন্ময় লিখেছেন, ‘আমি জয়েন করে দেখি, চিকিৎসক রাজীব ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষ করে পোস্টমর্টেমের কেসগুলিতে নাক গলাচ্ছেন। ভেবেছিলাম, তিনি হয়তো আমাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক। পরে খেয়াল করি, শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর কেসগুলি নিয়েই তিনি আগ্রহী। কিছু কেসে পিএম রিপোর্টকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। গুলিবিদ্ধ কোনও মৃতদেহ হাসপাতালে এলে, তিনি আসল তথ্য চেপে দিতে বলতেন। তদন্ত আটকানোর চেষ্টা করতেন।’
পরীক্ষা ব্যবস্থাতেও গরমিল করার অভিযোগ উঠেছে রাজীবের বিরুদ্ধে। তন্ময় জানিয়েছেন, রাজীব পরীক্ষাহলে কড়াকড়ি না করতে বলতেন। রাজি না হলে ভয়ও দেখানো হতো। তন্ময় লিখেছেন, ‘আমাকে কয়েক জন পড়ুয়ার নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলেছিলেন। আমি রাজি না-হওয়ায়, প্রবল মানসিক চাপ তৈরি করা হয়। আমাকে স্বাস্থ্য ভবনে কমপালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠানোর হুমকিও দেন তিনি।’
তন্ময়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি স্বচ্ছ ভাবে পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলাম। তাই মেডিক্যাল পড়ুয়াদের একাংশকে দিয়ে আমাকে হুমকি দেন রাজীব। আমাকে ঘেরাও হয়েও থাকতে হয়েছিল৷’ এমএসভিপির বিরুদ্ধে তাঁকে জাত তুলে গালাগালি করারও অভিযোগ এনেছেন তন্ময়।
তন্ময়ের দাবি, গত ১৮ মার্চ স্বাস্থ্য দপ্তরকে ও মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালকে তিনি এমএসভিপি-র একাধিক দুর্নীতির কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন। এর পরেই তাঁকে মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষার কনভেনারের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে বঞ্চিত করে তাঁর থেকে নিচু পদে থাকা একজনকে এই পদে বসানো হয় বলে তাঁর অভিযোগ৷
গত ১৫ জুলাই এসএসকেএম হাসপাতালে বদলি হন তিনি। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন বিভাগে লিখিত ভাবে চিঠি দিলেও এখনও তার ভিত্তিতে তদন্ত হয়নি। রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগগুলি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমি নিজেও চাই, আইনি ভাবে গোটা ঘটনার তদন্ত হোক। তবেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে এই ধরনের অভিযোগগুলির কোনও বাস্তবতা নেই।’