• স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগেও দুর্নীতি! সিবিআইয়ের সন্দেহের তিরে সেই আর জি কর
    প্রতিদিন | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • স্টাফ রিপোর্টার: শিক্ষক, পুরসভার পর এবার স্বাস্থ‌্যকর্মী নিয়োগ দুর্নীতির তথ‌্য সিবিআইয়ের হাতে। গত কয়েক বছরে আর জি কর হাসপাতালে স্বাস্থ‌্যকর্মী নিয়োগে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে বলে খবর কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি আর জি করে দুর্নীতির তদন্ত শুরুর পর এই চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। আর জি করে এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ও পুর নিয়োগ দুর্নীতির বেশ কিছু মিলও পেয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। এই স্বাস্থ‌্যকর্মী নিয়োগ দুর্নীতির পিছনে আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। তাই তাঁকে জেরা করার সময় এই প্রসঙ্গ তুলতে পারে সিবিআই।

    আর জি করে (RG Kar Hospital) দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও ECIR দায়ের করেছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। ফলে আর জি কর ছাড়াও কলকাতা বা রাজ্যের অন‌্য হাসপাতালগুলিতেও নিয়োগকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি হয়েছে কি না, সেই ব‌্যাপারে তদন্ত করতে পারে ইডি। এদিকে, বুধবার দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইয়ের (CBI) একটি টিম মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত আর জি কর হাসপাতালে ছিল। সিবিআই আধিকারিকরা আর জি করের অধ‌্যক্ষ ও সুপারের ঘরে বসেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু তথ‌্য জেনে নেন। সন্দীপ ঘোষ আর জি করের অধ‌্যক্ষ থাকাকালীন যে ফাইলগুলিতে সই করেছিলেন, সেগুলি তাঁরা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। পদে থাকাকালীন বেশ কয়েকটি কম্পিউটার বাতিল হিসাবে ফেলে রেখেছিলেন সন্দীপবাবু ও তাঁর অফিসের কর্মীরা। সিবিআইয়ের মতে, ওই কম্পিউটারের মধ্যেই থাকতে পারে দুর্নীতির বহু তথ‌্য। তাই সেই পুরনো কম্পিউটারগুলির হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করে পরীক্ষার জন‌্য নিজেদের দপ্তরে নিয়ে যায় সিবিআই।

    বুধবার দুপুরে সিবিআইয়ের একটি টিম ফের আর জি কর হাসপাতালে যায়। টেন্ডারের জন‌্য যে ভুয়ো নথি ব‌্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, সেগুলি পরীক্ষা করেন তাঁরা। সিবিআইয়ের কাছে খবর, গত কয়েক বছরে আর জি কর হাসপাতালে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ‌্যকর্মী (Health workers) পদে নিয়োগ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ‘টেকনিক‌্যাল স্টাফ’-এর সংখ‌্যাই বেশি। ল‌্যাবরেটরির প‌্যাথোলজিস্ট, মাইক্রো বায়োলজিস্ট, বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়। এই পদগুলিতে নিয়োগের জন‌্য কোনও লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হত না। শুধুমাত্র ইন্টারভিউ (Interview) হত। ইন্টারভিউ নেওয়ার পর তৈরি হত একটি ব্রডশিট। তাতে থাকত নামের তালিকা।

    সিবিআইয়ের কাছে আসা অভিযোগ অনুযায়ী, এই নামের তালিকার ক্ষেত্রেই হত কারচুপি (Fraud)। তালিকায় অপেক্ষাকৃত নিচের দিকে যাঁদের নাম থাকত, বিপুল টাকার বিনিময় তাঁদের নাম উপরের দিকে রাখার ব‌্যবস্থা করা হয়। তার জন‌্য ফের নতুন তালিকা তৈরি করে আর জি কর কর্তৃপক্ষ। একেকটি পদে নিয়োগের জন‌্য গড়ে দশ লক্ষ টাকা নেওয়া হত বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সিবিআই এই তথ‌্য যাচাই করছে। আর জি কর হাসপাতালে গিয়ে এই নিয়োগের নথির সন্ধান চালান সিবিআই আধিকারিকরা। নিয়োগের সময় কারা ইন্টারভিউ নিতেন, সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh) বা সুপার নিজেরা নিতেন কি না, সিবিআই তা জানার চেষ্টা করছে। সিবিআইয়ের অনুমান, হাসপাতালের এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গেও একাধিক কর্তা ও আধিকারিক জড়িত। তাঁদেরও শনাক্ত করে জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে সিবিআই। ২০২১ সাল থেকে হওয়া যাবতীয় ময়না তদন্তের নথি সিবিআই নিতে চায়। তার ব‌্যবস্থা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)