বিশালাকৃতি টিউমার নিয়ে অতিষ্ট রোগী, সফল অস্ত্রোপচার চন্দননগর হাসপাতালে
এই সময় | ৩০ আগস্ট ২০২৪
ফের সরকারি হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচার। ৫০০ গ্রামের টিউমার অপারেশন চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ আছেন রোগী। ডান হাতে বিশাল টিউমার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন রোগী। অবশেষে সফল অস্ত্রোপচারের কারণে কার্যত প্রাণ ফিরে পেলেন হুগলির বাসিন্দা মিতা রায়। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা।হুগলির ভদ্রেশ্বরের বিঘাটি গৌরাঙ্গপুরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের মিতা রায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ডান হাতের নিম্নাংশে (বগলে) নিচে টিউমারের সমস্যায় ভুগছিল। বহু চিকিৎসকের দুয়ারে ঘুরলেও সুস্থ হতে পারেননি। বছর খানেক ধরে হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাচ্ছিলেন তিনি। শেষমেশ সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করেন মহিলা। এরপরে গত এক মাস ধরে চন্দননগর হাসপাতালে আউটডোরে সার্জেন্ট আত্মদ্বীপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি।
দিন কয়েক আগে অ্যানাস্থেটিক চিকিৎসক স্বরূপ পন্ডিতের তত্ত্বাবধানে মহিলাকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়। অস্ত্রোপচার করে ৫০০ গ্রাম ওজনের টিউমারটি বার করা হয়। যা লম্বায় ও চওড়ায় এক ফুট করে। আপাতত ওই মহিলা সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। মিতা দেবী বলেন, ‘শরীরে বড় একটা টিউমার হয়েছিল। কিন্তু বাড়িতে প্রতিবন্ধী ছেলে থাকায় অপারেশনের করতে ভয় পাচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়ে কমে যাবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। পরে আমি চন্দননগর হাসপাতালে যোগাযোগ করি। চিকিৎসকরা আমার টিউমারটিকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অপারেশন করেন। বর্তমানে আমি সুস্থ রয়েছি ,চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাই।’
চিকিৎসক আত্মদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘ছ’বছর ধরে ভুগছিলেন ওই মহিলা। তাঁর শরীরের ডানদিকের বগলের কাছে টিউমার ছিল। ইউএসজি, এমআরআই করে দেখা যায় সেটি পাঁজর পর্যন্ত রয়েছে। যেটা শরীরের নার্ভ বা ভাল্বের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। সেটা দেখার পরেই আমরা অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত করি। কিছুটা সাহস নিয়েই এই অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল আমাদের।’ তিনি জানান, যে জায়গায় টিউমারটি ছিল, সেখানে দিয়ে অনেক নার্ভের সংযোগ রয়েছে। ছয় বছর ধরে থাকার ফলে টিউমারটি থেকে ক্যান্সার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ফলে টিউমারটিকে বের করা কঠিন হতো। এই বড় অপারেশনগুলি মহাকুমা হাসপাতালে হয় না। এগুলি মেডিক্যাল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি ডিপার্টমেন্টে হয়। আপাতত ওই মহিলা সুস্থ রয়েছেন এবং তার হাত সচলভাবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
চন্দননগর হাসপাতালে সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, ‘৫০০ গ্রাম ওজনের এক স্কয়ার ফুট ব্যাসার্ধের টিউমার কেটে বাদ দেওয়া হয়। কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর সুস্থ হলে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। একটা মহকুমার সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো এমন নেই যে এত বড় অপারেশনের ঝুঁকি নেওয়া যায়। এরপরেও হাসপাতালের চিকিৎসকরা সব রকম চেষ্টা করেছেন। সফল হয়েছেন।’