• ধান বিক্রির জন্য আগাম রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: ধান বিক্রির জন্য আগে থেকেই করতে হবে রেজিস্ট্রেশন। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ধান বিক্রি করতে পারবেন না চাষিরা। ফড়ে রাজ কমাতেই এই উদ্যোগ। খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনও ভাবেই আর ধান বিক্রি সম্ভব নয়। বিভিন্ন সরকারি সহায়তা কেন্দ্র থেকেও চাষিরা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। তবে চাষিদের কথায়, আগের তুলনায় ধানের দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে জেলায় ফড়ে রাজও কমে এসেছে। বায়োমেট্রিক দিয়ে ধান বিক্রি করার পদ্ধতি আসায় অনেকটাই স্বচ্ছতা ফিরেছে।  

    এদিন জেলার খাদ্য নিয়ামক অরবিন্দ সরকার বলেন, আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। না করলে ধান বিক্রি করতে পারবেন না চাষিরা। প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে তাঁদের স্থানীয় সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। এনিয়ে জেলাব্যাপী প্রচার করা হচ্ছে। 

    প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান শিল্পের পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রেরও উন্নতি হোক। চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ‘কৃষকবন্ধু’ সহ বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। একইসঙ্গে ধানের ঘাটতি মেটাতে স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র, সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র ছাড়াও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য মোবাইল ধান ক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টার ফলে ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা। এরফলে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। গ্রামীণ এলাকার অর্থনীতি বদলানোর পাশাপাশি চাষের পরিমাণও বাড়ছে। জানা গিয়েছে, জেলায় গত মরশুমে  প্রায় ২ লক্ষ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনতে পেরেছিল সরকার। তার আগের মরশুমে প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে আগের তুলনায় ধানের দাম বেশি পাওয়ায় বিক্রির পরিমাণও বাড়ছে বলে মনে করছে প্রশাসনের আধিকারিকরা। জেলায় এক কুইন্ট্যাল প্রতি ২ হাজার ১৮২ টাকা পেয়েছেন চাষিরা। এছাড়া ধান ক্রয় কেন্দ্রে নিয়ে এলে ২০ টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আধার কার্ড, কৃষক বন্ধু কার্ড, জমির নথি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যিক। অনলাইনে স্লট বুকিংয়ের মাধ্যমে ধান বিক্রি করতে হবে। এখনও পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৩ হাজার চাষি রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। তবে আরও লক্ষাধিক চাষির রেজিস্ট্রেশন বাকি বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত সেই প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

    এক ধানচাষি বলেন, ধানের মূল্য আরও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। কারণ দিন দিন সার, কীটনাশকের দাম  অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে কালোবাজারি শুরুর হয়েছে। এতে নাভিশ্বাস উঠছে চাষিদের। এর ফলে অল্প লাভ রেখেই সরকারকে ধান বিক্রি করছেন বহু চাষি। 

    এদিন কথা হচ্ছিল শালবনী এলাকার চাষি বিকাশ মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, জেলায় চাষের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। এছাড়া ফলনও ভালো হয়। তবে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অনেক নথির প্রয়োজন। অনেক চাষির নেই সেইসব নথি। তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। তবে এই উদ্যোগে চাষিদের সুবিধাই হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)