দাঁতনে তৃতীয় লাইন বসানোর জন্য বন্ধ হচ্ছে রেলের রাস্তা, সমস্যায় বাসিন্দারা
বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা বেলদা: দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে রেলের জায়গার ওপর থাকা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছেন বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের। দাঁতন গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁকিবাজার লেভেল ক্রসিং সংলগ্ন এলাকায় থাকা ওই রাস্তাতে বর্তমানে চলছে খড়গপুর-বালেশ্বর রুটে তৃতীয় লাইনের সম্প্রসারণের কাজ। সেই কারণে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে ওই রাস্তা। বেহাল ওই রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আগামীতে ওই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানিয়ে বার বার রেলের আধিকারিকদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রেলের উদাসীনতায় বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে একাধিক গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
দাঁতনের বাঁকিবাজার রেলগেট দক্ষিণ দিকে মিল বাজার হয়ে আঁইকলা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা গিয়েছে। আর ওই রাস্তার শুরুর অংশে প্রায় ৮০০ মিটার রাস্তা রয়েছে রেলের অধীনে। যে রাস্তা দিয়ে দীর্ঘ বেশ কয়েক দশক ধরে যাতায়াত এলাকার মানুষের। ওই রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াত করে স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ। ৩০টির বেশি গ্রামের মানুষজন প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে দাঁতন বাজারে আসেন। মূলত দাঁতন বাজারের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের মূল মাধ্যম এই রাস্তা। কিন্তু বর্তমানে খড়্গপুর-বালেশ্বর রুটে রেলের থার্ড লাইনের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। রেলের জায়গায় থাকা ওই রাস্তার উপর দিয়েই যাবে থার্ড লাইন। তাই প্রতিদিন ওই রাস্তার উপর কাজ চলার ফলে চলাফেরা করা দুষ্কর হয়ে উঠেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ওই রাস্তার উপরে লাইন পাতার কাজ হয়ে গেলে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে যাতায়াত। আর তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় এলাকাবাসী।
এই রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াত করেন অশোক নন্দ। তিনি বলেন, আমার জন্মের আগে থেকে স্টেশনের পাশে রেল লাইনের ধার দিয়ে এই রাস্তা গিয়েছে। আমরা সহজে এই রাস্তা দিয়ে দাঁতন যেতে পারি। কিন্তু বর্তমানে রেল সেই রাস্তার উপর দিয়ে লাইন পাতার কাজ চলায় যাতায়াত করা দুষ্কর হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে এই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে খুব সমস্যার মুখে পড়ব। সন্দীপ মাইতি বলেন, এই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার ঘুরে আমাদের দাঁতন আসতে হবে, যা সত্যি কষ্টদায়ক।
সম্প্রতি এই রাস্তার বিষয় রেলের বিভিন্ন আধিকারিকের কাছে দাঁতন ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে চিঠি। গত কয়েকদিন আগে রাস্তা সংস্কারের দাবি তুলে স্টেশনে ডেপুটেশন সহ রেল অবরোধ করা হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবেশ দাস বলেন, রেলের কাছে বিকল্প ব্যবস্থার জন্য আমরা বারবার জানিয়েছি। স্থানীয়রা আন্দোলনও করেছেন। কিন্তু কোনও সমাধান সূত্র বেরয়নি। উল্টে আন্দোলনের জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রেল। তবে আমরা শেষ দেখে ছাড়ব। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের খড়্গপুর ডিভিশনের রেলের এক আধিকারিক বলেন, রেলের যে অংশ দিয়ে তৃতীয় লাইন যাওয়ার কথা, তা নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূর্ণ করতে হবে। রেল কখনও রাস্তা বানিয়ে দেয় না, তা সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতকে করতে হয়। তবে কীভাবে তা হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।