• বাঁকুড়া শহরে সরকারি জমি দখল করে মদ, গাঁজা বিক্রি
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল বলে পরিচিত মাচানতলা এলাকায় সরকারি জমিতে দেদার বিকোচ্ছে মদ, গাঁজা। জেলা প্রশাসনের দখলে থাকা ওই জায়গার একাংশ জবরদখল করে বেআইনি কারবার চলছে। জেল কালেক্টরেট থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই ওই জায়গা। দীর্ঘদিন ধরে নেশার সামগ্রী বিক্রির চক্র গজিয়ে উঠলেও পুলিস বা প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।  বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে বাঁকুড়া পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ওই জায়গা পুরসভাকে হস্তান্তর করে দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসকের (উন্নয়ন) সঙ্গে চেয়ারম্যানের বৈঠক হয়।

    পুর চেয়ারম্যান বলেন, মাচানতলা এলাকায় জেলা প্রশাসনের এক একরের কিছু বেশি জায়গা রয়েছে। ওই জায়গা জবরদখল করে বেআইনি কার্যকলাপ চলছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। ওই জায়গার একাংশে একটি পুরনো ভবন রয়েছে। আগে সেখানে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের কার্যালয় ছিল। বর্তমানে ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে যে কোনও সময় সেটি ভেঙে পড়তে পারে। ওই ভবনের নীচে বেশকিছু দোকানপাটও রয়েছে। ফলে ভবন ভেঙে পড়লে অনেকে হতাহত হতে পারেন। ভবনটি ভেঙে দেওয়ার জন্য আমি জেলাশাসককে চিঠি লিখেছি। সেটি ভাঙার পর সমগ্র জায়গাটি পুরসভাকে হস্তান্তরের জন্যও প্রশাসনকে বলা হয়েছে। ওই জায়গায় আমরা মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে তুলব। সেক্ষেত্রে উচ্ছেদ হওয়া হকারদের পুনর্বাসনও দেওয়া যাবে। পুরসভার আয়ও বাড়বে। অতিরিক্ত জেলাশাসকের (উন্নয়ন) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে।   

    বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, জায়গাটির ব্যাপারে আমি পুরোপুরি অবগত নই। চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিস্তরিত আলোচনার পর এব্যাপারে যা বলার বলব। 

    উল্লেখ্য, বাঁকুড়া শহরে দীর্ঘদিন ধরেই মদ, গাঁজা, নেশার ট্যাবলেট বিক্রির রমরমা রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেশি মদের বোতল বেআইনিভাবে বিক্রি করা হয়। দোকান থেকে কেনার পর চড়া দরে রাতভর শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেশি মদের বোতল বিক্রি হয়। মাচানতলার ওই সরকারি জায়গায় কয়েকটি ঝুপড়ি রয়েছে। সেখান থেকেই মদ, গাঁজা বিক্রির কারবার চলে বলে অভিযোগ। ওই ঝুপড়ি মালিকদের কয়েকজনের শহরের অন্যান্য জায়গায় পাকা বাড়ি রয়েছে। কেউ কেউ আবার গৃহনির্মাণ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির টাকাও পেয়েছে। তা সত্ত্বেও তারা ঝুপড়ি ছেড়ে দেয়নি। নেশার কারবার চালানোর জন্যই দিনের বেশ কিছুটা সময় তারা ঝুপড়িতে থেকে যায়। সন্ধ্যা নামলেই কারবার ফেঁদে বসে।

    বাঁকুড়া সদর থানার এক আধিকারিক বলেন, বেআইনি নেশার কারবারের অভিযোগে পেলেই অভিযান চালানো হয়। মাচানতলার সংশ্লিষ্ট জায়গায় প্রায় প্রতিদিনই পুলিসের ভ্যান টহল দেয়। সেখানে বর্তমানে নেশার সামগ্রী বিক্রি হয় না। তিনি আরও বলেন, জায়গা জবরদখলমুক্ত করতে প্রশাসনকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন উদ্যোগী হলে পুলিস আইন মোতাবেক সহযোগিতা করবে।
  • Link to this news (বর্তমান)