• ৫০ কোটির প্রকল্পে খয়রাশোলের ১৬ হাজার বাড়িতে পৌঁছবে জল
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: জলস্তর নেমেছে ৮০০-১২০০ ফুট নীচে। ভবিষ্যতের কথা ভাবলে দুশ্চিন্তা বাড়ছে সকলের। সেকারণেই নিত্যনতুন ভাবনাচিন্তা করছে প্রশাসন। খয়রাশোলের অজয় নদের পাড়ে তৈরি হচ্ছে সাব সারফেস ওয়াটার প্রকল্প। ৪৯কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫মিটার গভীরতায় সাব সারফেস ট্যাঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে ফিল্টারের মাধ্যমে জল এসে জমা হবে। সেই জল পাইপলাইনের মাধ্যমে গোটা ব্লকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই প্রকল্পটি চালু হয়ে গেলে খয়রাশোলের জলকষ্ট দূর হয়ে যাবে বলেই আশা রাখছেন আধিকারিকরা।

    পিএইচইর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেশবন্ধু হাজরা বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটার রিসার্চ বিভাগের একটি টিম খয়রাশোলে এসে পরিদর্শন করে গিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে প্রায় ৪৯কোটি টাকা খরচ হবে। শুধু খয়রাশোল নয়, রাজনগরের একাংশেও এখান থেকে জলের জোগান দেওয়া যাবে। আগামী বছর মার্চ মাস থেকে প্রকল্পের সুবিধা আমরা পাব বলে আশা রাখছি।

    জানা গিয়েছে, বীরভূমের ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পশ্চিম দিকের ব্লকগুলির ভূ-গর্ভস্থ জলস্তর দিন দিন নীচে নামছে। দু’বছর আগে যেখানে ৪০০ ফুটেই জল পাওয়া যেত এখন সেখানে ৭০০ফুট নীচেও জল মিলছে না। ডিপ টিউবওয়েল করলেও জলস্তর মিলছে না। জল মিললেও এক বছরের মাথায় জল পড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তখন টিউবওয়েলগুলি অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হিসেবে ভাবা হচ্ছে, হয়তো এইসব এলাকাগুলিতে জল মাটির নীচে পৌঁছচ্ছে না। বিশেষ করে পাথুরে এলাকাগুলিতে জল মাটি চুঁইয়ে নীচে নামছে না। অথচ অনবরত জল তোলা হচ্ছে। খয়রাশোল ব্লকেও ঠিক একইরকম অবস্থা। সেকথা মাথায় রেখে টামরা এলাকায় অজয়ের পাড়ে মাটির নীচে ট্যাঙ্কটি তৈরি হচ্ছে। সেখানে নির্দিষ্ট দূরে দূরে সমতলের সঙ্গে সমান্তরালভাবে ছ’টি ফিল্টার মেশিন বসানো থাকছে। সেই ফিল্টার মেশিন দিয়ে জল চুঁইয়ে এসে ট্যাঙ্কটিতে জমা হচ্ছে। এরপর সেই জমা জল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্রামের দিকে পরিস্রুত পানীয় জল পাঠানো হবে। জলজীবন মিশন কর্মসূচিতে ওই ব্লকের ১৬হাজার ৪৬টি বাড়িতে ওই জল পৌঁছে দেওয়া হবে। মূল লক্ষ্য, শুধুমাত্র ভৌম জলের উপর ভরসা না করে থেকে অন্য কোনও উপায়ে জলের জোগান দেওয়া। সারা বছর অজয় কানায় কানায় পূর্ণ না থাকলেও অল্প হলেও জল থাকে। সেকারণে পাড়ের বেশ কিছুটা দূরত্ব অনুযায়ী মাটিতে প্রচুর জল মিশে থাকে। সেই জলকেই ফিল্টার করে ট্যাঙ্কে ফেললেই জলের অনেক চাহিদা মিটবে। দপ্তরের এক আধিকারিক আরও বলেন, নদীর চরে হাত দিয়ে বালি কেটে গর্ত করতে আমরা দেখেছি সেই গর্তে জল জমে যাচ্ছে। আশপাশ থেকে জল এসে সেই গর্তে পড়ছে। ঠিক সেই ভাবনা এখানে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩০শতাংশ কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী ছ’মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। এই প্রকল্প চালু হলে জেলার খয়রাশোল, রাজনগরে জলের চাহিদা পুরোপুরি মিটে যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)