• স্বাধীনতার ৭৭ বছর পর বিদ্যুত্ কাজলদিঘিতে, নতুন জীবন শুরু হল, বলছেন বাসিন্দারা
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: ফাইভ জি-র যুগে বিদ্যুত্ই পৌঁছয়নি!

    আশ্চর্য মনে হলেও সেটাই সত্যি ছিল বুধবার পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার প্রথমবার বিদ্যুত্ পরিষেবা পাওয়ার পর যেন অন্য জগতে পৌঁছে গিয়েছেন  ইংলিশবাজারের কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজলদিঘি গ্রামের বাসিন্দারা। স্বাধীনতার ৭৭ বছর পর বিদ্যুৎ পেল এই গ্রাম। মালদহের আম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। অথচ আমবাগান বেষ্টিত গ্রামের ৪০টি পরিবার এত বছর ডুবে ছিল আঁধারে।

    জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম গ্রামটিতে বিদ্যুৎ পৌঁছল। এরজন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ। কারণ তাঁদের বিশেষ উদ্যোগেই এই কাজটি করা সম্ভব হয়েছে। 

    প্রশাসন এবং বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজলদিঘি গ্রামটির চারিদিকে রয়েছে বড় বড় সব আম বাগান। এই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য বাগানের উপর দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি এবং হাইটেনশন তার নিয়ে যেতে হতো। গত কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার বহু চেষ্টা করে। প্রতিবারই নানা কারণে আম বাগান মালিকরা আপত্তি জানান। সেই বাগান মালিকদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে তাঁদের বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয় জেলা প্রশাসন। তারপরেই আম বাগানে টাওয়ার বসিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে জেলা বিদ্যুৎ দপ্তর। 

    বিদ্যুত্ সংযোগ পেয়ে বাসিন্দারাও যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। এদিন প্রথমবার আলো জ্বলেছে শ্যামল মণ্ডলের বাড়িতে। তিনি বললেন, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আমাদের গ্রামে বিদ্যুত্ এসেছে। রাতে এখন আমাদের আর অসুবিধা হবে না ভেবে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। আজ থেকে নতুন জীবন শুরু হল।

    কাজলদিঘি গ্রামে ৪০ টি পরিবার থাকলেও বৃহস্পতিবার মাত্র চারটি বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পুজোর আগে বাকি বাড়িগুলিতে পুরোদমে পরিষেবা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে দপ্তর থেকে।

    রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার মালদহ রিজিয়নের ম্যানেজার সৌমেন দাস বলেন, উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা জেলার সর্বত্র পৌঁছে দিতে আমরা সবসময় চেষ্টা করি। কিছু সমস্যার জন্য কাজলদিঘিতে এতদিন বিদ্যুত্ পরিষেবা দেওয়া যায়নি। তবে এখন থেকে বাসিন্দারা সবরকম সুবিধা পাবেন।

    ইংলিশবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেশ পাল অত্যন্ত খুশি ওই গ্রামে পরিষেবা চালু হওয়ায়। তাঁর কথায়, এতদিন বহু মানুষ কষ্টের মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে বিদ্যুত্ সরবরাহ চালু হওয়ায় তাঁরা যেন নতুন জীবন পেলেন। তাঁদের দাবি পূরণ করতে পেরে আমরাও ভীষণ আনন্দিত।
  • Link to this news (বর্তমান)