নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: গত বছর অ্যাথলেটিক্সে ইস্ট জোন আন্তঃরাজ্য মিটে সোনা এসেছিল। আর এবার ইয়ুথ ন্যাশনালে হাইজাম্পে (২.০৬ মিটার) প্রথম হয়ে ঝুলিতে এসেছে আরও একটি সোনার পদক। কিন্তু এখানেই থেমে যেতে রাজি নয় কৃষক পরিবারের ছেলে দেওয়ানগঞ্জের সাগর রায়। আরও বড় লক্ষ্যে জলপাইগুড়িতে (স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া) সাই-এর মাঠে কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে একাদশের ওই ছাত্র।
বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। ফলে গত ছ’বছর ধরে সাইয়ের ক্যাম্পেই রয়েছে সে। আপাতত জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে চমক দেওয়ার জন্য কোচ তাঁকে তৈরি করলেও সাগরের লক্ষ্য, ইন্টারন্যাশনাল মিট এবং ওলিম্পিক্সে অংশ নিয়ে পদক জেতা। তবে তার জন্য দরকার আরও ভালো প্রশিক্ষণ। সেকারণে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে চেষ্টার খামতি নেই সাগরের। ন্যাশনাল সেন্টার অব এক্সেলেন্সে (এনসিওই) ভর্তির বেঞ্চ মার্ক পূরণ করে ফেলেছে সে। এখন ডাক আসার পালা, জানালেন জলপাইগুড়ির সাই-এর কোচ ওয়াসিম আক্রম।
বাবা প্রদীপ রায় চাষবাস করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট সাগর। দাদা প্রশান্তরও খেলাধুলোয় ভীষণ নেশা ছিল। কিন্তু ধরে রাখতে পারেননি। পরিবারের ভাত জোগাড়ে খেলার মাঠ ছেড়ে বাবার সঙ্গে ধরতে হয়েছে লাঙল। কিন্তু সাগর পড়াশোনার পাশাপাশি অ্যাথলেটিক্স চালিয়ে যেতে চায়। গত জুন মাসে ছত্তিশগড়ের বিলাসপুরে যে ইয়ুথ ন্যাশনাল অ্যাথলেটিক্সের আসর বসে সেখানে এ রাজ্য থেকে অংশ নেয় দু’জন। কলকাতা থেকে সুযোগ পায় সাইদুল শেখ আর জলপাইগুড়ি থেকে সাগর। সাইদুল নবম হলেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেয় জলপাইগুড়ির ছেলে। স্কুল ন্যাশনাল ও খেলো ইন্ডিয়াতেও অংশ নিয়েছে সাগর। মিলেছে পদক।
জলপাইগুড়ি সাই-এর কোচ ওয়াসিম আক্রমের দাবি, সাগরের পারফরমেন্স সত্যিই তাক লাগানোর মতো। আগামী নভেম্বরে জুনিয়র ন্যাশনাল হওয়ার কথা। তার জন্য তৈরি করছি ওকে। সাগরের যা পারফরম্যান্স ও ন্যাশনাল ক্যাম্পেও সুযোগ পাওয়ার মতো।