• জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে একমাসে দেড়শো ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা, ৮০ জনকে কেমো
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: একমাসে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী দেড়শো। এর মধ্যে নিখরচায় কেমো দেওয়া হল ৮০ জনকে। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের আন্দোলন চললেও ভাটা পড়েনি ক্যান্সার চিকিৎসায়। ফলে খুশি রোগীরা। 

    বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বীরপাড়ার মুজনাই চা বাগান থেকে কেমো নিতে এসেছিলেন করমি ওরাওঁ। গলব্লাডারে ক্যান্সার তাঁর। বললেন, চারমাস ধরে চিকিৎসা চলছে এখানে। ডাক্তারদের আন্দোলন চলেছে ঠিকই, কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে কেমো পেয়েছি। বেলাকোবা থেকে এসেছিলেন জয়ন্তী দাস। তাঁর ফুসফুসে ক্যান্সার। আউটডোরে বসে বললেন, গত সপ্তাহেই আমার কেমো ছিল। অসুবিধা হয়নি। 

    মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠকে স্বাস্থ্যভবনের তরফে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, চিকিৎসকদের আন্দোলন চলাকালীন কতজন ক্যান্সার আক্রান্ত পরিষেবা না পেয়ে ফেরত গিয়েছেন? আমরা জানিয়েছি, এখান থেকে একজনও ফেরত যাননি। যাঁদের কেমো ছিল, তাঁরা নির্দিষ্ট দিনে পেয়েছেন। যেসব ক্যান্সার রোগীর অপারেশন ছিল, তাঁদের নির্দিষ্ট দিনে ওটি হয়েছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, স্টোর বিভাগ সবার সহযোগিতাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। 

    জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অঙ্কোলজিস্ট ডাঃ রাহুল ভৌমিক বলেন, চলতি মাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা ক্যান্সার আক্রান্ত পুরনো রোগী দেখেছি ১৩০ জন। নতুন রোগী দেখা হয়েছে ২০ জন। এমাসে ৮০ জনের মতো কেমো পেয়েছেন। এদিনও ন’জনকে কেমো দেওয়া হয়েছে। আউটডোরে ১৪ জন ক্যান্সার আক্রান্তকে দেখা হয়েছে। তাঁর দাবি, চিকিৎসকদের আন্দোলন চলেছে ঠিকই, কিন্তু ক্যান্সার আক্রান্তদের চিকিৎসায় তার কোনও ছাপ পড়তে দিইনি আমরা। জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের ক্যান্সার বিভাগের অপর চিকিৎসক সুদীপ্ত চক্রবর্তী বলেন, আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিটি গাইডেড বায়োপসি রিপোর্ট রোগীর হাতে তুলে দিচ্ছি। প্যাথলজির সহযোগিতায় এটা সম্ভব হচ্ছে। যেসব ক্যান্সার আক্রান্তের ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন, তার জন্য আমাদের মেডিক্যালে ফিজিওথেরাপিস্ট রয়েছেন। 

    এদিন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, বীরপাড়া, ধূপগুড়ি সহ দূরদূরান্ত থেকে ক্যান্সার আক্রান্তরা এসেছেন। মেখলিগঞ্জ থেকে আসা কল্যাণ বর্মন বলেন, আমার বাবার গলব্লাডারে ক্যান্সার। তিনমাস ধরে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকদের আন্দোলনে কলকাতায় অনেক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে না বলে টিভিতে খবর দেখেছি। কিন্তু আমাদের তেমন দুর্ভোগে পড়তে হয়নি। নির্দিষ্ট দিনেই কেমো মিলেছে। 

    চিকিৎসক রাহুল ভৌমিকের দাবি, আমাদের মেডিক্যালে কেমো দেওয়ার জন্য দশটি বেড রয়েছে। প্রায়দিনই সব বেডে রোগী ভর্তি থাকে। তবে আমাদের এখানে এখনও রেডিয়েশন মেশিন নেই। ফলে রেডিয়েশনের জন্য রোগীদের এখন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ও মালদহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)