সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার ও দিনহাটা: এবছর রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন সম্মান পাচ্ছেন বীরপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ব্রত ভট্টাচার্য এবং দিনহাটার গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুলের শিক্ষক জাকির হোসেন মিয়াঁ। একইসঙ্গে রাজ্যের সেরা বিদ্যালয় পুরস্কার পাচ্ছে গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুল।
জয়ব্রতবাবু বীরপাড়ারই বাসিন্দা। বীরপাড়া হাইস্কুলেই পড়াশোনা করেছিলেন। বাবা বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য সেনা বাহিনীতে ছিলেন। মা মীনাক্ষীদেবী ছিলেন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা। ১৯৯৯ সালে রাজ্য পুলিসের সাব ইন্সপেক্টরের পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, তাঁর মনের মধ্যে ছিল সমাজের শিক্ষার প্রসার ঘটানো। সেই ইচ্ছে থেকেই পুলিসের চাকরি করার সময়েই এসএসসি পরীক্ষা দেন। পাশ করে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেন। ছেড়ে দেন ২২ বছরের পুলিসের চাকরি। এরপর বিভিন্ন স্কুল ঘুরে পাঁচ বছর আগে জয়ব্রত তাঁর প্রথম স্কুল বীরপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন। সেখানে যোগ দেওয়ার পরেই আশপাশের চা বাগানগুলির আদিবাসী ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
জয়ব্রত বলেন, পুলিসে বদলির চাকরিতে বাবা-মায়ের সমস্যা হচ্ছিল। আমারও পুলিসের চাকরিতে মন বসছিল না। সমাজে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে শিক্ষকতার পেশায় চলে আসি। শিক্ষারত্নের জন্য রাজ্য সরকার নির্বাচিত করায় তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
এদিকে, ২০২০ সালের পরে এ বছর ফের রাজ্যের সেরা বিদ্যালয় পুরস্কার পাচ্ছে দিনহাটার গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুল। স্কুলেরই শিক্ষক জাকির হোসেন মিয়াঁ শিক্ষারত্ন সম্মান পাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাস আলি বলেন, সরকারি স্বীকৃতি আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দিল।
টানা ২১ বছর শিক্ষাদান করছেন জাকির হোসেন। কোভিডের সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইনে তিনি ক্লাস নিতেন। শিক্ষকতা ছাড়াও কবি হিসেবে জনপ্রিয় জাকির সাহেব। লেখালেখির জন্য একাধিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন তিনি। জাকির হোসেন মিয়াঁ বলেন, পুরস্কার মূল্যের সঙ্গে আরও ৭৫ হাজার টাকা যোগ করে মোট এক লক্ষ টাকা স্কুলকে দান করব। প্রতিবছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এবং প্রথম, দ্বিতীয় স্থানাধিকারীকে সেই টাকায় বৃত্তি দেওয়া হবে।