• বদলাচ্ছে আইন, অনলাইনে জমি বাড়ির রেজিস্ট্রি
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত ১১ বছরে জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে একাধিক অত্যাধুনিক ব্যবস্থা চালু করেছে রাজ্য সরকার। কোভিড কালে শুরু হয়েছিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য অনলাইনে আবেদন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্পূর্ণ ফেসলেস বা বাড়িতে বসে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করা যায়নি বলেই মত প্রশাসনিক মহলের। জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে জালিয়াতি ঠেকাতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনে যে পরিবর্তন, সেই বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কার্যত বাংলার চাপে অবশেষে মোদি সরকার ১১৬ বছরের পুরনো রেজিস্ট্রেশন আইনে ঢালাও পরিবর্তন আনতে চলেছে বলে খবর।

    বর্তমানে জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশন হয় ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী। সম্প্রতি, দেশে ভারতীয় দন্ডবিধি বা ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের (আইপিসি) পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) কার্যকর করেছে কেন্দ্র। অথচ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট বদল করা নিয়ে রাজ্যের তরফে বেশ কয়েক বছর ধরে বারংবার বলা হলেও কেন্দ্রের তরফে তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সূত্রের খবর, বাংলা, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকের পাশাপাশি আরও কয়েকটি রাজ্য সম্প্রতি এই দাবিতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়েছে। তার পরেই নড়েচড়ে বসেছে মোদি সরকার। জানা গিয়েছে, বর্তমান আইনে সংশোধনী আনার বদলে সময়োপযোগী বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে একেবারে নতুন আইন আনতে রাজ্যগুলির সঙ্গে ভার্চুয়ালি আলোচনা শুরু করেছে মোদি সরকার। এক্ষেত্রে ইতিমধ্যে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলির মতামতও চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

    রাজ্যের প্রশাসনিক মহলের মতে, ১৯০৮ সালের পরিস্থিতির সঙ্গে ২০২৪ সালের কোনও মিল নেই। বিভিন্ন সময়ে সংশোধনী হলেও বর্তমানে এর ঢালাও পরিবর্তন প্রয়োজন। না হলে বহু ক্ষেত্রে আটকে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ। রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি যত বেশি অনলাইন নির্ভর করা যাবে, এই ক্ষেত্রে তত কমবে জালিয়াতির ঘটনা। ভোগান্তির শিকার হতে হবে না আমজনতাকে। এটা কেন্দ্রীয় আইন। ফলে নয়াদিল্লি নতুন আইন বা আইনে ঢালাও পরিবর্তন না আনলে সংশোধনীর ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির হাত বাঁধা থাকছে। 

    কেন্দ্রের তরফে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সমস্ত কাজকর্মের ভার গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অধীনে থাকা ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রিসোর্সের। সূত্রের খবর, আইন বদল হলে সাব-রেজিস্ট্রারদের ক্ষমতা অনেকটা বৃদ্ধি পেতে পারে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে জমির মালিকের নাম ব্যবহার করে অন্য কোনও ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নয়া আইন তৈরি হলে এই ধরনের অভিযোগ যাতে একটিও না আসে, তা সুনিশ্চিত করা যাবে। বর্তমানে জালিয়াতির নানা উপায় বেরিয়েছে। তার মোকাবিলা করতে প্রয়োজন ‘ফুল প্রুফ’ ব্যবস্থা। ইংরেজ আমলের এই আইন পরিবর্তন না হলে যা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
  • Link to this news (বর্তমান)