আয়াকে যৌন নির্যাতন, অভিযুক্ত বিজেপি নেতা, মারধর করে পুলিসের হাতে তুলে দিলেন স্থানীয়রাই
বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের খুন-ধর্ষণের বিচার চেয়ে রাজ্য জুড়ে নানান কর্মসূচি করছে গেরুয়া শিবির। এমনকী ‘ভেকধারী ছাত্রদের’ আড়ালে নবান্ন অভিযানের নামে অশান্তি ও নৈরাজ্য পাকানোর কাজও সেরেছে তারা। পদ্মপার্টি চাইছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগও। এরকম একটা আবহে সোদপুরের নাটাগড়ে এক বিজেপি নেতার কুকীর্তিকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ, অসুস্থ মায়ের সেবার নাম করে এক আয়াকে বাড়িতে এনে রাতভর অত্যাচার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ওই যুবতী ঘর থেকে কোনওমতে পালিয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকাবাসী গুণধর বিজেপি নেতাকে রাস্তায় ফেলে গনপিটুনি দেয়। এরপর পুলিস ওই নিগৃহিতা যুবতী ও বিজেপি নেতাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিস জানিয়েছে, স্পন্দন দাস নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতকে এদিন বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত স্পন্দনের বাড়ি নাটাগড় রামকৃষ্ণপল্লিতে। এলাকায় বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত। নিজেকে আইনজীবী হিসেবে জাহির করতেন। অসুস্থ মায়ের দেখাশোনার জন্য স্পন্দন দক্ষিণ কলকাতার একটি আয়া সেন্টারে যোগাযোগ করেছিলেন। ওই সেন্টার থেকে আয়া হিসেবে এক যুবতীকে পাঠানো হয়। তাঁর বাড়ি টালিগঞ্জ এলাকায়। বুধবার সন্ধ্যায় সোদপুর স্টেশন থেকে ওই বিজেপি নেতা তাঁকে বাইকে চাপিয়ে বাড়িতে আনেন। কিন্তু ওই যুবতী এসে দেখেন, বাড়িতে অসুস্থ কোনও মহিলা নেই। তিনি বাড়ি ফিরতে চাইলেও, তাঁকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এরপর রাতভর মদ্যপ অবস্থায় ওই বিজেপি নেতা তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ। এমনকী যুবতীর আর্তচিৎকার কেউ যাতে শুনতে না পায়, তাই ফুল ভল্যুমে মিউজক সিস্টেম চালিয়ে রাখেন। একসময়ে ওই বিজেপি নেতা মদের ঘোরে বেকাবু হয়ে পড়লে, ওই আয়া রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘরের দরলা খুলে বেরিয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। এদিন দুপুরে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিগৃহিতা যুবতীর মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়। ওই নিগৃহীতা বলেন, জোর করে আটকে রেখে সারা রাত মদ খেয়ে চরম অত্যাচার করেছেন ওই লোকটা। কাজ করতে এসে এমন অত্যাচারের শিকার হব, স্বপ্নেও ভাবিনি। এমন পিশাচের কঠোর সাজা চাই। নির্যাতিতার সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা তুলিকা দাস সহ আরও অনেকে। পানিহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুভাষ চক্রবর্তী বলেন, বিজেপি নির্যাতিতার বিচার চাইছে। আবার তাদের লোকেরাই ধর্ষণ করেছে। ঘটনায় অভিযুক্তর ফাঁসি চাই। পানিহাটির বিজেপি নেতা জয় সাহা বলেন, এই ধরনের অপরাধীদের কোন দল থাকেনা। আমরাও চাই, পুলিস তদন্ত করে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করুক।