শ্যামবাজারে আছড়ে পড়ল তিন মিছিল, লাটে ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা
বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করের ঘটনার বিচারের দাবিতে একের পর এক মিছিল ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ছে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে। সেখানে ব্যারিকেডের পিছনে লাঠি হাতে, হেলমেট পরে পুলিস দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিকেল চারটে নাগাদ প্রথমে এল রাজ্য সরকারি পেনশনার্সদের মিছিল। সেই মিছিলের স্লোগানের স্বর থামতে না থামতেই, পিছনে এসে গেল মেয়েদের ডাকে অঙ্গীকার যাত্রার মিছিল। সেই মিছিল যখন পেনশনার্সদের পিছনে, তারও পিছনে এসে গেল কংগ্রেস। এরকম দৃশ্য শেষ কবে দেখেছে শ্যামবাজার? আদৌ কি দেখেছে? দীর্ঘদিনের দোকানিরাও মনে করে বলতে পারলেন না। তবে মিছিলের স্রোতে যে ব্যবসায় টান পড়ছে, সেই আঁচ পাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। মিছিল দেখলেই শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীদের মুখে জমছে দুর্ভাবনার কালো মেঘ। ব্যবসা মার খাওয়ার আতঙ্কে সেখানকার ব্যবসায়ীরা। ইমিটেশনের দোকান, কাচের কাপ-প্লেটের দোকান, ফল ব্যবসায়ী সকলেই দুশ্চিন্তায়। এক বিক্রেতা বললেন, ‘আর জি করের ঘটনার পর থেকে আমাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। সামনে পুজো। জানি না, কী হবে! তবে এই অন্যায়ের বিচার আমরাও চাই। আমরাও প্রতিবাদকে সমর্থন করি।’ মিছিল আসার আগেই ব্যারিকেড করে পুলিস একেবারে প্রস্তুত ছিল। তার মধ্যেই একটি অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে। পুলিস আর কী করবেন! তড়িঘড়ি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা ব্যারিকেড খুলে দেয় পুলিস। আবার বেঁধে দেওয়া হয়। পিছন পিছন তিনটি মিছিলের স্রোত দেখে পুলিসও স্ট্র্যাটেজি বদলাল। বজ্র আঁটুনির ব্যারিকেড পুলিসই খানিক খুলে দিলেন। সেখান থেকে সব মিছিলের লোকজন ধীরে ধীরে বেরিয়ে গেলেন। একটু এগিয়েই আবার মিছিল শেষে অধীররঞ্জন চৌধুরী ভাষণ দেন। এক দোকানি বলছিলেন, ‘আদৌ কি এভাবে জাস্টিস আসবে? শ্যামবাজার যেন হাওড়া স্টেশন। একের পর এক ট্রেন আসছে। প্ল্যাটফর্ম দেওয়া যাচ্ছে না।’ তবে কোনও মিছিলই কিন্তু ছোটখাটো নয়। প্রত্যেকটি মিছিলই কলেবরে বেশ বড়। এত মিছিল একসঙ্গে আছড়ে পড়ার ফলে যা হয়, গোটা শ্যামবাজার চত্বরের ট্রাফিক নিমেষে ঘেঁটে গেল। কলেজ স্কোয়ার থেকে কংগ্রেসের মিছিল আসার ফলে বিকেলের দিকে রাস্তায় বেশ যানজট হয়। কিন্তু প্রতিবাদীরা আন্দোলনের জ্বরে কাবু। চলতে চলতেই পুলিস দেখে তাঁরা বলছিলেন, ‘আপনার বাড়িতেও তো মেয়ে আছে।’ পুলিসও পাল্টা বললেন, ‘যান না, আন্দোলন করুন।’