• নিমন্ত্রণ বাড়িতে এসে ১০ বছরের মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ, ধৃত বাবার বন্ধু
    বর্তমান | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করের রেশ এখনও টাটকা। তার মধ্যেই হরিদেবপুরের ফের বিকৃত যৌন লালসার শিকার এক নাবালিকা। চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার উপর নারকীয় অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত নাবালিকার বাবার বন্ধু। তাকে গ্রেপ্তার করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিস। ধৃতের নাম উত্তম দে (৪৯)। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিদেবপুর থানা এলাকার কালীপুর অঞ্চল। স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখান। চলে ভাঙচুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামে বিরাট পুলিস বাহিনী। বৃহস্পতিবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। 


    স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কালীপুর এলাকার স্বচ্ছল ব্যবসায়িক পরিবারের সন্তান ওই নাবালিকা। নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। অভিযুক্ত উত্তম দে এই নাবালিকার বাবার বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক বন্ধুত্ব রয়েছে। দুই পরিবারের মধ্যে একে অপরের বাড়িতে যাওয়া আসা রয়েছে বলে জানিয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। ঘটনার সূত্রপাত জন্মাষ্টমীর রাতে। নির্যাতিতার বাবা পুজো উপলক্ষ্যে বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানান উত্তমকে। সন্ধ্যায় সে আসে। অভিযোগ, বাড়ির দোতলায় পুজো চলছিল। একতলায় উত্তমের সঙ্গেই ছিল ১০ বছরের নাবালিকা। আচমকা চিৎকার করতে শুরু করে সে। সেই চিৎকার শুনে উপর থেকে নেমে আসেন পরিবারের সদস্যরা। বালিকা আর্তনাদ করায় ভয় পেয়ে চম্পট দেয় উত্তম। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, তার শরীরের একাধিক জায়গায় কামড়ের দাগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, গোপনাঙ্গে হাত দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এরপরেই পরিবারের সদস্যরা সোমবার রাতেই হরিদেবপুর থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগের ভিত্তিতে নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষা করায় পুলিস। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পকসো আইনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নির্ধারিত ধারায় শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নির্যাতনের মামলা রুজু করেন তদন্তকারীরা। পুলিস সূত্রের খবর, অভিযোগের পর শিশুসুরক্ষা কমিশনে গোটা বিষয়টি জানানো হয়। কমিশনের প্রতিনিধিরা নাবালিকাকে নিয়ে গিয়ে কাউন্সেলিং করেন। তার বয়ানও নেয় কমিশন। কলকাতা পুলিসের ডেপুটি কমিশনার (সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশন) রাহুল দে বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত উত্তম দে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। বুধবার গভীর রাতে কালীপুরের বাড়িতে ফেরে সে। গোপন সূত্র মারফত সেই খবর পান তদন্তকারীরা। এরপর সেখানে হানা দিয়ে অভিযুক্ত উত্তম দে’কে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকায় খবর রটে যায়, ‘উত্তমকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিস’। তাতে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে। ক্ষোভে ধৃতের বাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়ে হরিদেবপুর থানা থেকে বিশাল পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে পরিস্থিতি সামাল দেন তাঁরা। স্থানীয়দের বক্তব্য, আর জি করের ঘটনার পর এবার হরিদেবপুরে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটল। মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
  • Link to this news (বর্তমান)