• আমজনতার ক্ষতে প্রলেপ দিতে কিছু তো করুন, রাজ্যকে বলল কোর্ট
    এই সময় | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: ধর্মতলায় বিজেপির ধর্নামঞ্চ ১০ ফুট সরানো নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে অস্বস্তিতে পড়তে হলো রাজ্যের বর্ষীয়ান কৌঁসুলিদের। এই ইস্যুতে আর আইনি লড়াইয়ে না গিয়ে, সরে দাঁড়ানোর পরামর্শও রাজ্যের আইনজীবীদের দিলেন প্রধান বিচারপতি।রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম বলেন, ‘মানুষের মনে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর জন্য কিছু করুন। নতুন করে আঘাত দিয়ে এমন কিছু করবেন না, যাতে সেটা বেড়ে যায়। বিরক্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলুন, তাঁদের ভালো ভাবে বোঝানোর ব্যবস্থা করুন।’

    আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে একাধিক প্রতিবাদ-মিছিল হচ্ছে। তেমন বেশ কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে রাজ্য আপত্তি করায় হাইকোর্টে মামলাও হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।

    এই আবহে ওয়াই চ্যানেলে বিজেপির ধর্নামঞ্চ ১০ ফুট সরানো নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে এ দিন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলা করার অনুমতি চায় রাজ্য। সেই আবেদন বাতিল করে উল্টে রাজ্যের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী অমল সেন বলেন, ‘ধর্মতলায় পিয়ারলেস হোটেলের উল্টোদিকে ডোরিনা ক্রসিং থেকে সরিয়ে ওয়াই চ্যানেলের সামনে করার নির্দেশ দিক আদালত। সাতদিনের জায়গায় দু’দিনে ধর্না শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হোক।’

    এজলাসে তখন ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং আদালতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের সিনিয়র স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান বিচারপতি বর্ষীয়ান কৌঁসুলি অমল সেনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি নিজে বিষয়টা হ্যান্ডল করুন। এই নিয়ে মামলা ফাইল করলেই খারিজ করে দেবো। আমরা দেখেছি আপনাদের পদ্ধতি। যেখানে ডান হাতে কাজ হয় না, সেখান বাঁ হাত ব্যবহার করেন। বিষয়টি তুললে আরও লজ্জায় পড়তে হবে আপনাদের।’

    অ্যাডভোকেট জেনারেল তখন বিষয়টি কিছুটা হালকা করতে গেলে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ খানিকটা রসিকতার সুরে তাঁকেই ‘মূল মাথা’ বলে মন্তব্য করে। আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘এখন মামলার লাইভ স্ট্রিমিং চলছে। সবাই দেখছেন। ফলে এখন এ নিয়ে আমাদের মুখ খোলালে আপনাদের বিড়ম্বনা আরও বা়ড়বে।’

    প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘একটা মিছিলই যথেষ্ট। বুধবার বন্‌ধের মধ্যেও শহরে আরও ৪৬টি সভা-সমাবেশ হয়েছে। আমি নিজেও এই জ্যামে আটকে গিয়েছি। এ সবের জন্য স্কুলও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই হচ্ছে। আপনারা নিজেরা একটু ভাবুন।’ আদালত মামলা দায়েরের সুযোগ না দেওয়ায় আগাম সাতদিন বিজেপির ধর্নামঞ্চ ওই একই জায়গায় থাকছে বলে মত আইনজীবীদের একাংশের।
  • Link to this news (এই সময়)