আরজি করের বিচার হবে কবে! কেন্দ্রীয় এজেন্সির জবাব চায় পদ্মও
এই সময় | ৩০ আগস্ট ২০২৪
মণিপুস্পক সেনগুপ্ত
শুধু তৃণমূল নয়, এ বার সিবিআইয়ের কাছে জবাব চাইছে বিজেপিও! তারাও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে জানতে চাইছে, আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তদন্তভার নেওয়ার ১৬ দিন পরেও কেন রহস্যের কিনারা হলো না?বুধবারই মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরজি করের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এতদিনেও সিবিআই কেন তদন্তের কিনারা করতে পারল না, সেই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি মমতা স্লোগান দেন, ‘বিচার চাই, বিচার দাও, সিবিআই জবাব দাও।’ সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়াতে রাজ্য জুড়ে বেশ কিছু আন্দোলন কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কার্যত একই সুরে সিবিআইকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বঙ্গ-বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা রাহুল সিনহাও। এ দিন ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি সিবিআইকে নিশানা করে বলেন, ‘আপনাদের নাটক বন্ধ করুন। অনেক নাটক হয়েছে! এ বার একটা সিদ্ধান্তে আসুন। এঁর বাড়ি, তাঁর বাড়ি যাওয়া অনেক হয়েছে। এ বার অন্তত ময়দানে আসুন। যারা খুন করল, ধর্ষণ করল তাদের শাস্তি মানুষ দেখতে চায়। কোর্ট তৈরি, বাংলার মানুষ তৈরি।’
সিবিআইয়ের উদ্দেশে রাহুলের পরামর্শ, ‘আরও তৎপরতার সঙ্গে, জোরদার ভাবে তদন্ত করতে হবে আপনাদের। যাতে একজন দোষীও ছাড়া না পায়। বাংলার মানুষ কিন্তু অতীতে কোনও ইস্যুতে এত বড় জোট বাঁধেনি।’ রাহুল যখন ধর্মতলার মঞ্চ থেকে সিবিআইকে কড়া বার্তা দিচ্ছেন, তখন সেখানে হাজির দলের আরও দুই শীর্ষ নেতা সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ। ফলে সিবিআইয়ের প্রতি রাহুলের এই মনোভাব যে নিছকই তাঁর ব্যক্তিগত নয়, তা একরকম স্পষ্ট বলেই অভিমত গেরুয়া শিবিরের একাংশের।
রাহুলের এ দিনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপিই তো এতদিন সিবিআইয়ের জুজু দেখাত সবাইকে। কথায় কথায় বলত, আজ এর বাড়িতে সিবিআই যাবে, কাল ওর বাড়িতে সিবিআই যাবে। আসল নাটক তো বিজেপি করছে। এ সব খেলা বাংলার মানুষ ধরে ফেলেছে।’
তৃণমূলের একাংশের মতে, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ যে ধীরে ধীরে সিবিআইয়ের দিকে ঘুরতে শুরু করেছে, সেটা আঁচ করেই বিজেপি নেতারাও সিবিআইকে নিশানা করার কৌশল নিয়েছে। আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রথমে তদন্ত করে কলকাতা পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তারা মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। ১৩ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে আরজি করের ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেয়।
কিন্তু এরপর ১৬ দিন কেটে গেলেও নতুন একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি সিবিআই। যা নিয়ে সব থেকে বেশি সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দল। এ বার বিজেপিও একই পথে হাঁটতে শুরু করায় স্পষ্ট, আরজি কর ইস্যুতে বঙ্গ-রাজনীতির জল আরও ঘোলা হতে শুরু করেছে।