এই সময়: তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে নাগরিক সমাজের মিছিল থেকে স্লোগান উঠল ‘সিবিআই-কে চেপে ধর, জাস্টিস ফর আরজি কর।’‘পথের দাবি’ ব্যানারে বৃহস্পতিবার নাগরিক সমাজের এই মিছিলে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সমর্থকরাও ছিলেন। ছিলেন অভিনেতা চন্দন সেন, বাদশা মৈত্র, গায়ক অভিজিৎ বর্মণ (পটা), গায়ক দুর্নিবারের মতো পরিচিত মুখ। তাঁদের সঙ্গেই পা মেলান বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক, শিক্ষকরা।
সেই মিছিলে কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত হাঁটেন সদ্যপ্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের সন্তান সুচেতন। যথাযথ বিচারের দাবিতেই তিনি পথে নেমেছেন বলে সুচেতন জানান। যে মিছিলের সামনেই বড় ব্যানারে লেখা — ‘বাধা দিলে বাধবে লড়াই’ এবং ‘মুক্ত করো ভয়’।
এখানে কেন আসা? পটার জবাব, ‘যারা আসল অপরাধী, তারা যাতে শাস্তি পায়, সেই দাবি জানাতেই আমি এসেছি। এটা এমন একটা ঘটনা, যা মনে আঘাত দিয়েছে।’ ময়দানের তিন প্রধানের সমর্থকরাও একস্বরে জানিয়েছেন, অপরাধী বা অপরাধীদের শাস্তির দাবিতেই তাঁরা ফের মিছিলে যোগ দিয়েছেন।
নাগরিক সমাজের এই মিছিল যতক্ষণে কলেজ স্কোয়্যার থেকে দক্ষিণ-মুখে গিয়েছে, তার আগেই অধীর চৌধুরী, ইশা খান চৌধুরী, মনোজ চক্রবর্তী, অসিত মিত্রের নেতৃত্ব কংগ্রেসের বিশাল মিছিল গিয়েছে উত্তর-মুখে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় আগেও মিছিল করেছে কংগ্রেস। কিন্তু অধীরের নেতৃত্বে বহুদিন পর মহানগরে হাত শিবিরের এত বড় মিছিল দেখা গেল।
শ্যামবাজারে মিছিল-শেষে অধীর বলেন, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার প্রতিবাদে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার উপরে কোনও রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণ নেই। অহিংস আন্দোলন কী ভাবে করতে হয়, রাজ্যের মানুষ দেখিয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দল এই আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করুক, তা আমরা চাই না।’
এ দিন ছিল কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস। তাই ‘জাগো নারী, জাগো বহ্নিশিখা’ ব্যানারে মহিলাদের অন্য একটি বড় মিছিলও কলেজ স্কোয়্যার থেকে শ্যামবাজার যায়। সেখানে ছিলেন চিত্র পরিচালক শতরূপা সান্যাল, অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষ, শিক্ষাবিদ মৈত্রেয় বর্ধনরা। রাধা গোবিন্দ করের (আরজি কর) পরিবারের সদস্যরাও সেখানে ছিলেন বলে জানান উদ্যোক্তারা। এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অঙ্গীকার যাত্রা’। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ লেখা প্ল্যাকার্ডের সঙ্গে নজরুলের ছবি দেওয়া প্ল্যাকার্ডও দেখা যায় মিছিলে।
জাস্টিসের দাবিতে স্লোগান দিয়ে মিছিলের পাশাপাশি জাস্টিস চেয়ে কলেজ স্কোয়্যারে নীরব জমায়েতও হয়েছে এ দিন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, প্রাক্তন শিক্ষকরা এ দিন সন্ধ্যায় কলেজ স্কোয়্যারে এই জমায়েত করেন। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সদস্যরা আবার আগামী ২ সেপ্টেম্বর জেলায় জেলায় বিভিন্ন গভর্নমেন্ট অফিসে দোষীর ফাঁসির দাবিতে টিফিনের সময়ে প্রতিবাদে সামিল হবেন বলে জানিয়েছেন।