• মন্তব্য ঘিরে 'বিতর্কের' ব্যাখ্যা দেন মমতা, 'আমল না দিয়ে' পালটা জবাব ডাক্তারদের
    হিন্দুস্তান টাইমস | ৩০ আগস্ট ২০২৪
  • টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ফোঁস' মন্তব্য থেকে 'এফআইআর' মন্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এরই মাঝে গতকাল এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নিজের 'অবস্থান' স্পষ্ট করে দিয়ে মমতা দাবি করেন, তিনি আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কোনও হুমকি দেননি। বরং তিনি তাঁদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। এই বিষয়ে এবার মুখ খুললেন আন্দোলনকারী মেডিক্যাল পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা।

    এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আমরা যদি এফআইআর করি বা কোনও আইনি ব্যবস্থা নিই, তা হলে আপনাদের কেরিয়ারটা নষ্ট হয়ে যাবে।' তাঁর এহেন মন্তব্যকে 'হুঁশিয়ারি' হিসেবে দেখছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে তারপরও তাঁরা জানিয়েছিলেন, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এই আবহে গতকাল মমতা আবার নিজের মন্তব্য নিয়ে ব্যাখ্যা দেন। আর মমতার সেই ব্যাখ্যার পর আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যাতে আমরা আমল দিচ্ছি না। আমাদের বিচার চাই।' পাশাপাশি তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও দাবি করেছেন। পাশাপাশি সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করা এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারর অপসারণের দাবিতেও তাঁরা অনড় আছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।

    এর আগে গত ২৮ অগস্ট রামকৃষ্ণদেবের একটি গল্প তুলে ধরে সমর্থকদের উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, 'আমাকে অনেক গালাগাল দিয়েছে, অসম্মান করেছে। বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। কিন্তু আজ বলছি যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভালো বুঝে করবেন। আমি অশান্তি চাই না। যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে কামড়াবেন না, কিন্তু ফোঁস তো করতে পারতে পারেন।' আবার চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা কিন্তু ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিইনি। কারণ, ওরা বন্ধুর জন্য আন্দোলন করছে। দিল্লিতে কিন্তু ওরা ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে দিয়েছিল। যে কারণে সুপ্রিম কোর্টকে বলে দিতে হয়েছে, ডাক্তারেরা কাজে ফিরলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আমার সমর্থন আছে। কিন্তু আপনাদের একটু মানবিক হওয়ারও আবেদন করব। সুপ্রিম কোর্টও আপনাদের অনুরোধ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে ক্ষমতা দিয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না। আপনাদের ক্ষোভ আছে। অভিমান আছে। আমি সেটা বুঝি। কিন্তু এ বার আস্তে আস্তে কাজে যোগদান করুন। আমরা চাই না, কারও সারা জীবনটা নষ্ট হোক। আমরা যদি এফআইআর করি বা কোনও আইনি ব্যবস্থা নিই, তা হলে আপনাদের কেরিয়ারটা নষ্ট হয়ে যাবে। ভিসা, পাসপোর্টে অসুবিধা হয়ে যাবে। আমি তা চাই না। আমাদের সরকার মানবিক। আমি চাই আরও ভালো ভালো ডাক্তার তৈরি করতে।'

    এই সব মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্ক তৈরি হলে ২৯ অগস্ট এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন মমতা। তাতে তিনি লেখেন, 'আমি কিছু প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং ডিজিটাল মিডিয়াতে একটি দূষিত বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার দেখতে পাচ্ছি। গতকাল আমাদের ছাত্রদের প্রোগ্রামে আমি যে বক্তৃতা দিয়েছিলাম তার রেফারেন্স দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আমি ছাত্রদের বা তাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি তাদের আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি। তাদের আন্দোলন অকৃত্রিম। আমি কখনও তাদের হুমকি দিইনি। তবে কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে সেই অভিযোগটাই করছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।'

    এরপর মমতা যোগ করেন, 'আমি বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি কারণ, ভারত সরকারের সমর্থনে তারা আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের সমর্থনে, তারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করছে এবং আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার আওয়াজ তুলেছি। আমি আরও স্পষ্ট করতে চাই যে আমি গতকাল আমার বক্তৃতায় যে বাক্যাংশটি ব্যবহার করেছি তা শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের একটি উদ্ধৃতি। কিংবদন্তি সাধক বলেছিলেন, মাঝে মাঝে আওয়াজ তুলতে হয়। যখন অপরাধ ও ফৌজদারি অপরাধ হয় তখন প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতে হয়। সেই বিষয়ে আমি সরাসরি মহান রামকৃষ্ণের উক্তি উদ্ধৃত করেছিলাম নিজের বক্তৃতায়।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)