ছুটি চাইতে গেলে দুর্ব্যবহার, পুলিশে অভিযোগ শিক্ষিকার
এই সময় | ৩০ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, বনগাঁ: মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে ছুটি চাইতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ঘরে গিয়েছিলেন ইতিহাসের শিক্ষিকা রাখি মণ্ডল বিশ্বাস। অভিযোগ, ছুটি তো পাননি উল্টে ছুটির অ্যাপ্লিকেশন লেটারটি প্রধান শিক্ষক ছুড়ে ফেলে দেন। অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ। পরের দিনই রাখি মণ্ডল বনগাঁ থানায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ কুমার ব্যাপারি অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।ছুটি দেওয়া নিয়ে বিতর্ককে কেন্দ্র করে বনগাঁর গড়াপোতা উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার বেধে যায়। অভিযোগকারিণী শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুলে সহ শিক্ষকরাও। রাখি পাশে পেয়েছেন অভিভাবকদেরও। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ কুমার ব্যাপারির ঘরে গিয়েছিলেন রাখি। শরীর ভালো না থাকায় রাখির কয়েকদিন ছুটির দরকার ছিল। তাই ছুটির দরখাস্ত জমা দিতে যান।
অভিযোগ, ছুটির কথা শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন পঙ্কজ। ছুড়ে ফেলে দেন রাখির দরখাস্ত। তারপর চিৎকার শুরু করেন। অপমানিত রাখি ঘর থেকে বেরিয়ে টিচার্স রুমে চলে যান। সেখানে গিয়ে সহ শিক্ষকদের কাছে পঙ্কজের এমন দুর্ব্যবহারের কথা বলেন। তা শুনে বাকি শিক্ষকরাও ক্ষোভে গর্জে ওঠেন। সকলে মিলে প্রধান শিক্ষকের ঘরে যান। অভিযোগ, তখন পঙ্কজ শিক্ষকদের সঙ্গেও চরম দুর্ব্যবহার করেন।
বৃহস্পতিবার পঙ্কজের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষকরা একজোট হয়ে কর্মবিরতিতে সামিল হন। কর্মস্থলে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ তোলেন। কোনও বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলেই দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন অনেক শিক্ষিকা। শিক্ষকদের এই প্রতিবাদে পাশে ছিলেন অভিভাবকরাও।
পড়ুয়ারাও বিক্ষোভে সামিল হয়। প্রধান শিক্ষকের ঘরে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় স্কুল চত্বরে। বিষয়টি জানানো হয় বনগাঁ সার্কেলের স্কুল পরিদর্শককে। স্কুলে গন্ডগোলের খবর পেয়ে চলে আসে বনগাঁ থানার পুলিশ। পরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগে দায়ের করেন ওই শিক্ষিকা।
রাখি মণ্ডল বিশ্বাস বলেন, ‘বুধবার আমি মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে ছুটির আবেদনপত্র নিয়ে গিয়েছিলাম। উনি তা ছুড়ে ফেলে দেন। আমাকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেন। আমরা সকলেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। উনি ছাত্রদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন।’
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ কুমার ব্যাপারি বলেন, ‘ওই শিক্ষিকা কয়েকদিন আগেই ছুটি নিয়েছিলেন। তাই আমি স্কুলের স্বার্থেই এখন ছুটি দিতে পারব না বলেছিলাম। ছুটির দরখাস্তটি আমার হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল। আমি ছুড়ে ফেলিনি। ওঁকে কোনও খারাপ কথাও বলিনি।’