আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রতিনিয়ত শহরে বিক্ষোভ, মিছিল চলছে। তারই মধ্যে আরও একটি মিছিলের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুদ্ধিজীবী এবং আইনজীবীদের একাংশ এই ঘটনার প্রতিবাদে বিচারের দাবিতে মিছিল করতে চেয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা তাঁদের সেই মিছিলের অনুমতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে বেশ কিছু শর্ত বেধে দিয়েছেন। মিছিলে অনুমতি না দেওয়ায় এদিন রাজ্য সরকারকেও ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। তিনি জানান, ‘সময় বেঁধে দিলেই বিক্ষোভ আটকাতে পারবেন?’
‘কালচারাল অ্যান্ড লিটারারি বেঙ্গল’- নামে একটি সংগঠনের তরফ এই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তারা রবীন্দ্রসদন থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মিছিল করতে চাইছে। এর জন্য পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই অনুমতি চেয়েছে সংগঠনটি। কিন্তু, পুলিশ তাদের অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ।
মিছিলে জনজীবন ব্যাহত হতে পারে, এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়ে পুলিশের তরফে মিছিলে অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেন, শুধু মিছিলের সময় বদলাতে চাওয়া হচ্ছে। কারণ তারা যে সময়ে মিছিল করার কথা বলছে, সেই সময় অফিস ছুটি হয়। তার ফলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়তে পারেন। সে কথা মাথায় রেখেই সেই নির্দিষ্ট সময়ে মিছিলে আপত্তি জানানো হয়েছে।
যদিও সংগঠনের তরফে আইনজীবী দাবি করেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবেই এই মিছিল করতে চাইছে। এরপরেই বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘চারিদিকে এত বিক্ষোভ হচ্ছে। সময় বেঁধে দিলেই কি আপনারা সেই বিক্ষোভ আটকাতে পারবেন?’ এমন মন্তব্যের পরে মিছিলের অনুমতি দেন বিচারপতি।
এদিন মিছিল অনুমতি দেওয়ার সময় বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট। সেক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যে কোনওভাবে যাতে মিছিলের ফলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না হয়। ৩ সেপ্টেম্বর সংগঠনটি বিকেল সাড়ে ৩ টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মিছিল করতে পারবে। আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার এই মিছিলের অনুমতি দেবেন বলে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের পরে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তার থেকেই শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। রাজ্য সরকারের তরফে মিছিল নিয়ে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করা হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে বলেছিল শান্তিপূর্ণ মিছিলে কোনও বাধা দেওয়া যাবে না।