আরজি করের প্রতিবাদে উত্তপ্ত কলকাতা পুরসভাও, বিচারের স্লোগান তুলে অধিবেশন ত্যাগ সজলদের
আনন্দবাজার | ৩০ আগস্ট ২০২৪
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কলকাতা পুরসভাও। মাসিক অধিবেশনে বিজেপি কাউন্সিলরেরা বিচারের দাবিতে স্লোগান তুললেন। অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে স্লোগান দিতে দিতেই বেরিয়ে গেলেন তাঁরা।
প্রতি মাসে কলকাতা পুরসভার একটি করে অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। শহরের সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা ওই অধিবেশনে হাজির থাকেন। বিভিন্ন এলাকার সমস্যা এবং কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হয় অধিবেশনে। নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। পুরসভার অগস্ট মাসের অধিবেশন ছিল শুক্রবার। সেখানেই অশান্তি হয়েছে।
কলকাতা পুরসভায় বর্তমানে বিজেপির তিন জন কাউন্সিলর রয়েছেন। ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ ছাড়াও রয়েছেন ২২ নম্বরের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজয় ওঝা। তাঁরা শুক্রবার পুরসভার অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি কাউন্সিলরেরা। প্রত্যেকের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। পুরসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে ‘আরজি করের বিচার চাই’ স্লোগান ওঠে। প্ল্যাকার্ড হাতে অধিবেশন কক্ষের চারদিকে ঘোরেন তাঁরা। এর পর কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, আরজি করের নির্যাতিতা তরুণীর স্মরণে এই অধিবেশন মুলতুবি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল তা মানতে রাজি নয়।
অধিবেশন কক্ষের বাইরে বসে সজল বলেন, ‘‘এই সরকার এত নির্লজ্জ, শিল্পী, খেলোয়াড়দের মৃত্যুতে এখানে শোকপ্রস্তাব পাঠ করা হয়, কিন্তু এক জন কর্তব্যরত চিকিৎসকের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব পাঠ করতে এঁরা রাজি নন। এটা কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে লজ্জা। এই পুরসভা চলাই উচিত নয়। সাধারণ মানুষ পুরসভার কাছ থেকে কী সুবিধা পান? ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া সবই তো হচ্ছে! আমরা বলেছিলাম, আজকের দিনে অধিবেশন মুলতুবি করুন। সারা কলকাতার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। আমরা চেয়েছিলাম, সভা আজ মুলতুবি হোক, অন্য দিন এই সভা করা হোক। এটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক। কিন্তু তাতে তৃণমূল রাজি নয়।’’ মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও কটাক্ষ করেছেন সজল। বলেছেন, ‘‘আরজি কর নিয়ে উনি কথা বলবেন কী ভাবে? বলতে গেলে তো নিজের মুখেই কালি লাগাতে হবে।’’
এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘ওঁরা কার কাছে বিচার চাইছেন? তদন্ত তো করছে সিবিআই। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। আর তা ছাড়া যাঁরা গুজরাতের ধর্ষণকারীদের জেল থেকে ছাড়িয়ে মালা দিয়ে বরণ করেন এবং উৎসব করেন, তাঁদের প্রতিনিধি হয়ে এখানে নাটক করার কোনও মানে নেই।’’
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে গত ৯ অগস্ট এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। এখনও কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।বিচারের দাবিতে প্রতি দিন পথে নামছে বিজেপিও। শুক্রবার কলকাতা পুরসভাতেও সেই প্রতিবাদের আঁচ লাগল।