প্রচুর সম্পত্তির মালিক, তাও ৩০ বছর শিকলবন্দি পাথরপ্রতিমার গৌরাঙ্গ
আজকাল | ৩০ আগস্ট ২০২৪
নুরউদ্দিন: এক দুই বছর নয়। টানা ৩০ বছর শিকলবন্দি এক যুবক। দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমা ব্লকের ভারতসেরা গ্রাম পঞ্চায়েতের যশোদা মোড় সংলগ্ন এলাকায়। বাড়ি সংলগ্ন একটি পুকুর পাড়ে ছোট একটি খুপড়ি ঘরে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত, বছরের পর বছর ওই ঘরেই কাটছে গৌরাঙ্গ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তির। বৃদ্ধা মা দেবলা মণ্ডল সারাদিন ঘুরে ভিক্ষা করে যা পান তাই দিয়েই খাওয়া জোটে দু'জনের। পরিবারের দাবি, গৌরাঙ্গ মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তাঁকে ওইভাবে রাখা হয়েছে।
অথচ যথেষ্টই জমির মালিক এই পরিবারটি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাত বিঘা জমির মালিক তাঁরা। তাহলে গৌরাঙ্গর কেন চিকিৎসা করা হচ্ছে না? অসহায় মায়ের অভিযোগ, জামাই সব বন্ধক দিয়ে দিয়েছে। তাই ভিক্ষা ছাড়া কোনও উপায় নেই। বয়সের জন্য খুব একটা দূরে যেতে পারেন না। পাড়া বা পাড়ার কাছেই ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করেন তিনি। জামাইয়ের কাছে টাকা চাইলে জামাই জানিয়ে দেয় টাকা নেই।
বছর ৪৫-এর গৌরাঙ্গ তাই অসহায়ভাবেই শিকল বন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কত দিন ধরে এই অবস্থা? গৌরাঙ্গর বোন করুণা সরদার বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে তাঁর দাদা একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হন। এরপর মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর থেকেই তাঁকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়। আগে মা ও দাদা তাঁদের নিজেদের বাড়িতে থাকতেন। কয়েক বছর আগে তাঁদের করুণা নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই তাঁরা তাঁর বাড়িতেই আছেন।
যদিও এলাকায় বেশ কিছু বাসিন্দার অভিযোগ, বৃদ্ধার জামাই সম্পত্তির লোভে ইচ্ছে করেই ডাক্তার দেখাচ্ছেন না। অসহায় মা সন্তানের চিকিৎসার জন্য লোকের কাছে অনুরোধ করা ছাড়াও সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় আছেন।