'নতুন করে তদন্ত হোক', আরজি কর আবহে ধনঞ্জয়ের 'কেস রিওপেন'-এর দাবি
এই সময় | ৩১ আগস্ট ২০২৪
মনোজ কর্মকার, তুহিনা মণ্ডল| এই সময় অনলাইন
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষীর ফাঁসির দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন আনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। এই ঘটনার মধ্যেই নতুন করে চর্চায় ভবানীপুরের বাসিন্দা হেতাল পারেখকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি। স্কুল পড়ুয়া হেতালকে ধর্ষণ ও খুনের অপরাধে ২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধানাগারে ফাঁসি হয় ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের।আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘিরে তোলপাড় গোটা রাজ্য। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সঞ্জয় রায় নামক এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে। তদন্তে নেমেছে সিবিআই। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় তোলা হয়েছিল ধনঞ্জয় প্রসঙ্গ। রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাও সম্প্রতি ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আরজি কর নিয়ে উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করেছিলেন।
আরজি কর কাণ্ডে দোষীর ফাঁসির দাবিতে দিন দিন আন্দোলনের ধার-ভার বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে হেতাল পারেখ ধর্ষণের তদন্ত নতুন করে চালুর দাবিতে সরব হয়েছেন বাঁকুড়ার ছাতনা এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। ছাতনাতেই বাড়ি ধনঞ্জয়ের। তাঁরা ধনঞ্জয়কে 'দোষী' মানতে নারাজ। আর সেই কারণেই 'কেস রিওপেন'-এর সুর এলাকাবাসীর কণ্ঠে।
১৯৯০ সালের ৫ মার্চ ১৪ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রী হেতাল পারেখকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্যে। ভবানীপুরের একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা ছিল সে। আর সেই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতেন ধনঞ্জয়। হেতাল খুনে ১৯৯০ সালে ১২ মে বাঁকুড়ার ছাতনার কুলুডিহিতে গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৪ বছর বিচার চলার পরে ২০০৪ সালে ১৪ অগস্ট ফাঁসি হয়েছিল ধনঞ্জয়ের। সেই সময় স্ত্রী পূর্ণিমা কেঁদে দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামী নির্দোষ। এরপর ২০ বছর কেটে গিয়েছে। নতুন করে চর্চায় ধনঞ্জয়। কুলুডিহিতে তার গ্রামের বাড়িতে আর থাকেন না পূর্ণিমা। শ্বশুরবাড়িতে খুব একটা পাও রাখেন না। জনসমক্ষে আসেন না খুব একটা।
ধনঞ্জয়ের পরিবারের বর্তমান সদস্যরা এ নিয়ে কেউই সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে রাজি নন। তবে গ্রামবাসী, পাড়া প্রতিবেশীদের একাংশ এখনও ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে 'দোষী' মানতে নারাজ। প্রতিবেশী মন্টু বাউরি বলেন, 'ধনঞ্জয় এলাকায় পরোপকারী হিসেবেই পরিচিত ছিল। প্রথম জীবনে গৃহশিক্ষকতা করত। তারপর কাজ পেয়ে ভবানীপুরে গেল। তারপর যে কী হল! আমরা আজও বিশ্বাস করতে পারি না ও এই ধরনের কোনও কাজ করেছে। আমরা চাই ফের এই ঘটনার তদন্ত হোক।'
ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ও ছাতনা এলাকার বাসিন্দা জীবন চক্রবর্তী বলেন, 'হেতাল পারেখের ধর্ষণ ও হত্যা মামলা পুনরায় চালু করার দাবিতে আমরা লাগাতার আন্দোলন করছি। নতুন করে তদন্ত হোক। আমরা আজও বিশ্বাস করি না ধনঞ্জয় এমন ঘৃণ্য কাজ করতে পারে।'