পিয়ালি মিত্র: আরজি কর হাসপাতালে (R G Kar Incident) তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ১৮ দিন পর প্রকাশ্যে আসে সেমিনার রুমের ভিডিও ও ছবি। ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ও ছবিতে দেখা গিয়েছে, নির্যাতিতার দেহ উদ্ধারের পরই সেখানে গিজগিজ করছে ভিড়। চাঞ্চল্যকর ভিডিও তুলে ওঠে নানা প্রশ্ন। সেমিনার রুমে এরা কারা? শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সেই ছবিতে উপস্থিত ব্যক্তিদের পরিচয় সামনে আনলেন ডিসি সেন্ট্রাল (DC Central) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় (Indira Mukhopadhyay)।
গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে ঘটে যায় নৃশংস ঘটনা। হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল দেহ। সম্প্রতি একটি ভিডিয়োতে ও একটি ছবিতে দেখা যায় যে যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেই ঘরে গিজগিজ করছে মানুষের ভিড়। প্রশ্ন ওঠে সেমিনার রুমে একজন অন-কল-ডিউটিরত চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর কীভাবে একসঙ্গে এত বাইরের লোক সেখানে ঢুকে পড়ে।
মৃতদেহ উদ্ধারের পর , অপরাধস্থল আগে সিল করে দেওয়ার কথা। নইলে এভাবে লোক চলাচল করলে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু দেহ উদ্ধারের পর মুহূর্তের ভাইরাল ভিডিয়োতে সেই নিয়ন্ত্রণের কোনও চিহ্নমাত্র নেই। রয়েছেন হাসপাতালের একাধিক কর্তাব্যক্তিও। কেন দেহ উদ্ধারের পর কোনও নিয়ন্ত্রণ রইল না পুলিশের, কাঠগড়ায় তোলা হয় পুলিসকে। এরপরেই পুলিস জানায় যে যেখান থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ঘরটি ৫১ ফুট লম্বা। যার মধ্যে ৪০ ফুট ঘিরে রাখাই ছিল। বাকি ১১ ফুটে হাজির ছিলেন হাসপাতালের কেউ কেউ।
শুক্রবার ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানান যে ভাইরাল ভিডিয়োতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা কেউ ফরেন্সিকের অফিসার, কেউ বা অ্যাডিশনাল সিপি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্ট, প্রত্যক্ষদর্শী ডাক্তার, ভিডিয়োগ্রাফার, টালা থানার মহিলা অফিসার, হোমিসাইডের ওসি সহ আরও অনেকে। ছবি ধরে সেখানেই মার্ক করে দেখিয়ে দেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।
২১ দিন পার, আরজি কর কাণ্ডে কিনারা হল না এখনও। সম্প্রতি তথ্য-প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা করছেন নির্যাতিতা বাবা-মা। বৃহস্পতিবার তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা যখন মেয়ের মৃতদেহ দেখেন, তখন তাঁর শরীরে যে চাদর ছিল, তা পরে বদলে দেওয়া হয়! বাবার দাবি, হাসপাতালে যাওয়ার পর যখন মেয়ের দেহ দেখেছিলেন, তখন গায়ে সবুজ চাদর ছিল। পরে সংবাদমাধ্যমে যে ছবি দেখানো হয়েছে, সেই ছবিতে চাদরে রং ছিল নীল। বৃহস্পতিবার ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানালেন, 'যেকোনও কেসের ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফি আর ভিডিয়োগ্রাফি একটা বড় পর্ব। এটা কিন্তু ধাপে ধাপে হয়েছে। যখন ইনকোয়েস্ট হয়েছে, তখন হয়েছে। যখন ফরেন্সিক টিম এসেছে, তখন হয়েছে। তারপর যখন সিজার হয়েছে, তখনও কিন্তু ভিডিয়োগ্রাফি, ফটোগ্রাফি হয়েছে। এই তিনটিতেই কিন্তু চাদরে রং নীল ছিল'।