ভারী বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন জায়গায় লাইনে জল জমে ব্যাহত হচ্ছে চক্ররেল পরিষেবা। কোথাও এক ফুট আবার কোথাও দেড় ফুট পর্যন্ত জল জমছে চক্ররেলের লাইনে। এর ফলে নিরাপত্তার কথা ভেবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে পরিষেবা। এছাড়াও, এরজন্য কলকাতা টার্মিনাল থেকে মেল/এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচলও প্রভাবিত হচ্ছে। তার জেরে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। এবার এই জল জমা নিয়ে শহরের নিকাশি ব্যবস্থাকে দায়ী করল রেল। এনিয়ে পুরসভাকে পদক্ষেপ করার আবেদন জানাল রেল। একইসঙ্গে, এই সমস্যার মোকাবেলায় পূর্ব রেলের তরফে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেবিষয়টিও জানানো হয়েছে।
পূর্ব রেলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারী বৃষ্টির সময় চক্ররেলের লাইন থেকে জল নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়। তারপরেও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে জল এসে পুনরায় রেললাইনে জমা হচ্ছে। রেলের তরফে বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে এর জন্য পুরসভার খারাপ নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, পুরসভার খারাপ নিকাশি ব্যবস্থার কারণেই চক্ররেলের লাইনে জল জমছে। বিশেষ করে কলকাতা টার্মিনালের কাছে বিদ্যানগর ব্রিজ নং ১৬/এ-র আশেপাশে চক্ররেলের কমন লাইন-১ এবং কমন লাইন-২-এর ওপর জল জমছে। রেলের তরফে বলা হচ্ছে, সঠিক নিকাশি ব্যবস্থার অভাবের কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে। এছাড়াও, জোয়ারের সময় কেষ্টপুর খাল উপচে পড়লে রেললাইনে জল জমে।
অন্যদিকে, দক্ষিণদারি এলাকার ব্রিজ নং ২০-র নীচেও ভারী বৃষ্টির সময় পাশের এলাকা থেকে জল ঢুকে রেললাইনে জমে। এখানেও অপর্যাপ্ত নিকাশি ব্যবস্থাকে দায়ী করেছে রেল। এছাড়াও, পাশের এলাকায় একটি পুকুর রয়েছে সেখানেও ভারী বৃষ্টির সময় জলস্তর বেড়ে গিয়ে রেললাইন ডুবে যায়। একই সমস্যা হচ্ছে মালিকঘাট এলাকায় চক্ররেললাইনে। হাওড়া ব্রিজের কাছে, বড়বাজার এবং বিবাদী বাগ স্টেশনের মধ্যে অবস্থিত এই লাইনে পাশের এলাকা থেকে জল ঢুকে ডুবে যাচ্ছে।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, রেললাইনের জল জমার সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য ২টি বৈদ্যুতিন পাম্প, ২টি অতিরিক্ত পাম্প এবং ১টি ডিজেল পাম্প রাখা হয়েছে। রেলওয়ে লাইন থেকে দ্রুত জল অপসারণ করার জন্য এগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু, অভিযোগ, এরপরও পাশের এলাকা থেকে বৃষ্টির জল এসে লাইনে জমছে।
এই সমস্যার সমাধানে পুরসভাকে উদ্যোগী হওয়ার আবেদন করেছে রেল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চক্ররেল যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা শুধুমাত্র স্থানীয় পুরসভার সক্রিয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। যদি তারা নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখে তাহলে পার্শ্ববর্তী এলাকার জল ঢুকবে না রেললাইনে। এতে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হবে না।