• কৌশিকী অমাবস্যা, কঙ্কালীতলা ও তারাপীঠে আজ থেকে পুণ্যার্থী ভিড়
    বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: কৌশিকী অমাবস্যা তিথি উপলক্ষ্যে সেজে উঠছে তারাপীঠ থেকে কঙ্কালীতলা মন্দির। সোমবার ভোর থেকে শুরু হচ্ছে কৌশিকী অমাবস্যা তিথি। তার আগে দু’দিনের সরকারি ছুটি রয়েছে। তাই শনিবার থেকেই দূরদূরান্তের পুণ্যার্থীদের আনাগোনা শুরু হবে বলে দুই মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে। অত্য঩ধিক ভিড়ে পুণ্যার্থীরা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে দেবীর দর্শন করে পুজো দিতে পারেন, তারজন্য বাঁশের ব্যারিকেড করা হচ্ছে। ফুল ও আলোকমালায় সাজিয়ে তোলা হবে গোটা মন্দির চত্বর। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রবিবার বিকেলে থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়তে চলেছে মন্দির দু’টি। সোমবার সারারাত খোলা থাকবে দুই মন্দিরই।   


    তারাপীঠে সব থেকে বড় উৎসব কৌশিকী অমাবস্যা। এই উৎসব মানেই লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম। বিশেষ এই তিথিতে পুণ্যলাভের আশায় ফিবছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমান। যা সামাল দিতে কালঘাম ছোটে পুলিসের পাশাপাশি মন্দির কমিটির। এবার সোমবার ভোরে এই তিথি শুরু হয়ে পরের দিন সকাল পর্যন্ত থাকছে। আগের দিন যেহেতু ছু’টি তাই রবিবার থেকেই ভক্তের ঢল নামবে। ওইদিন ভোর ৪টের সময় দেবীকে স্নান ও মঙ্গলারতির পর গর্ভগৃহ খুলে দেওয়া হবে। সন্ধ্যায় কয়েক ভরি স্বর্ণালঙ্কার পরিয়ে দেবী তারাকে কৌশিকী রূপে সাজিয়ে তোলা হবে। সারারাত ভক্তদের পুজো নেওয়া হবে। 


    মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, এবার প্রায় সাত লক্ষেরও বেশি ভক্ত সমাগম ঘটবে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ভক্তদের পুজো দেওয়ার লাইন বাঁশের ব্যারিকেড করে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। সারাবছর একশো সিকিউরিটি কর্মী থাকে। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে তিনশো করা হয়েছে। একইভাবে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা দ্বিগুণ করে ৭০টি বসানো হয়েছে। মন্দির চত্বরেই মেডিক্যাল ক্যাম্প, ফায়ারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


    সোমবার সন্ধ্যা হতেই মন্দিরের চেহারা পাল্টে যাবে। নানা রঙের আলোর ছটা গর্ভগৃহের দেওয়ালে ফেলা হবে। সেই সঙ্গে গোটা মন্দির চত্বর ফুল ও আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হবে। পুলিসের পক্ষ থেকে তারাপীঠের জনবহুল মোড়গুলিতে ওয়াচ টাওয়ারের পাশাপাশি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হচ্ছে। যাতে ভিড়ে যাঁরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না, তাঁরা এই স্ক্রিনের মাধ্যমে দেবীর পুজো ও আরতি দর্শন করতে পারবেন। সেই সঙ্গে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ২৭০০ পুলিস কর্মী। বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে শ্মশান চত্বরকে। 


    এদিকে সতীপীঠ বোলপুরের কঙ্কালীতলাতেও এবার ভিড় বাড়বে বলে আশাবাদী মন্দির কমিটি। তাই তাদের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তার সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগত ভক্ত ও সাধুসন্তদের সুবিধার্থে প্যান্ডেল খাটানো হচ্ছে। একাধিক অস্থায়ী হোমযজ্ঞ করার জায়গায় ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গোটা মন্দির চত্বরজুড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে শান্তিনিকেতন থানার পুলিস। 


    মন্দিরের সেবাইত বাবু চক্রবর্তী বলেন, ফুল ও নানা রঙের আলোয় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে গোটা মন্দির। রবিবার থেকেই বিশেষ পূজার্চনা শুরু হয়ে যাবে। পরের দিন সারারাত মন্দির খোলা থাকবে। ইতিমধ্যেই সাধুসন্তদের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। 


    সতীর ৫১ পীঠ নলাটেশ্বরী মন্দিরেও এই তিথিতে বহু ভক্তের ভিড় জমে। সেখানেও মন্দির চত্বর সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সররকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)