• তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে তপ্ত ভীমপুর, ধৃত উভয় পক্ষের ৩
    বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভীমপুর থানা এলাকায়‌। ঘটনায় উভয়পক্ষের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভীমপুর থানার পুলিস। ধৃতদের নাম, পার্থ বিশ্বাস, অসিত বিশ্বাস, শুভজিৎ বিশ্বাস। ধৃতদের শুক্রবার কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়। বিচারক চোদ্দ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের কার্যালয়ের মধ্যে ঢুকে জেলার যুব সভাপতি সুশান্ত মণ্ডলের উপর চড়াও হন  কৃষ্ণনগর-১ উত্তর ব্লকের সাধারণ সম্পাদক আলোক বিশ্বাস ও তাঁর লোকজন। যুব সভাপতিকে একা পেয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। যা নিয়ে ভীমপুর থানায় লিখিত অভিযোগে করেন যুব সভাপতি। পাশাপাশি, অপরপক্ষের তরফ থেকেও একটি মারধরের একটা অভিযোগ করা হয়। 


    জানা গিয়েছে, যুব সভাপতির তরফ থেকে ব্লকের ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন পার্থ বিশ্বাস, অসীত বিশ্বাস, আলোক বিশ্বাসের নামে ভীমপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে, আলোক বিশ্বাসের গোষ্ঠীর তরফ থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সহ সভাপতি দিব্যেন্দু বিশ্বাস, শুভজিৎ বিশ্বাসের নামে ভীমপুর থানায় অভিযোগ করে। কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি সুশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘দিব্যেন্দুর সঙ্গে কয়েকজন ছেলের একটু ঝামেলা হয়। তারপর ওরা সবাই মিলে আমার অফিসে আসে। দিব্যেন্দু ছাত্র সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছে। তাই আমি ওকে বলেছিলাম, ওকে কারওর দিকেই থাকতে হবে না। শুধু যেন পড়াশোনা করে। তারপর সব মিটমাট হয়ে যায়। আমার অফিস থেকেও ছেলেরা চলে যায়। রাতের দিকে হঠাৎ অলোক ও তার লোকজন আমার অফিসে চড়াও হয়। আমাকে অলোক আর ওর লোকজন মারধর করে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি।’


    কৃষ্ণনগর-১ উত্তর ব্লকের তৃণমূলের সম্পাদক অলোক বিশ্বাস বলেন, ‘আসাননগর বাজারে কাছে তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে আমাদের দলের ছাত্রনেতা দিব্যেন্দু বিশ্বাস এসে বলে যে সুশান্ত মণ্ডলের লোকজন মারধর করেছে। আমার কাছে এসে ছেলেটি কান্নাকাটি করছিল। তারপর আমরা সবই মিলে যুব সভাপতির কাছে যাই। তখন ওরা আমাদের মারার জন্য তেড়ে আসে। উভয়পক্ষের মধ্যেই ব্যাপক ধাক্কাধাক্কি হয়‌। পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’ 


    কৃষ্ণনগর-১ উত্তর ব্লকের সভাপতি দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘অলোক বিশ্বাস আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক। উনি যে কাজ করেছে তা অন্যায়। ওইভাবে যুব সভাপতির উপর চড়াও হওয়া কখনই মেনে যায় না। আমরা দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেব।’ উল্লেখ্য, জেলার যুব সভাপতি সুশান্ত মণ্ডল ও ব্লকের সাধারণ সম্পাদক আলোক বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। অসামাজিক কাজের জন্য ভীমপুর এলাকায় অলোক বিশ্বাসর বদনাম রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কয়েক সপ্তাহ আগে কৃষ্ণনগর-১ উত্তর সাংগঠনিক ব্লকের দায়িত্ব থেকে ধৃত পার্থ বিশ্বাসকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আশিস বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তখন থেকেই দুই শিবিরের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছিল। তারপর ব্লকের সহ সভাপতি পদ থেকেও দিব্যেন্দু বিশ্বাস পদত্যাগ করে। সেই থেকেই এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়। ( মারধরে জখম জেল তৃণমূলের সভাপতি সুশান্ত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)