• আর জি করের ছ’তলায় সার্জিক্যাল রুমে কেন সিবিআই, বাড়ছে জল্পনা
    বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সেমিনার হলই কি ঘটনাস্থল? নাকি অন্য কোথাও তরুণী চিকিৎসকে খুন করে দেহ সেখানে ফেলে রাখা হয়েছিল। বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। এই বিতর্কের মধ্যেই শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের ছ’তলায় সিবিআইয়ের যাওয়া নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। তাহলে কি তরুণী চিকিৎসকে খুন ও ধর্ষণ এখানে করা হয়েছে, এই প্রশ্ন উঁকি দিতে শুরু করেছে। রহস্য আরও বেড়েছে ছ’তলার সার্জিক্যাল রুম ভালো করে পরীক্ষা করায়। ঘটনাস্থল বদলের যে জল্পনা শুরু হয়েছে, শুক্রবারের পর তা আরও বেড়েছে। সেমিনার হলে যেভাবে তরুণী চিকিৎসকের দেহ পরিপাটি করে রাখা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসে। তদন্তকারীরা হাসপাতালের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, তৃতীয় ও ষষ্ঠ তলা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনার রাতে এই দু’টি তলে গিয়েছিলেন ওই তরুণী চিকিৎসক।  তার সূত্র খুঁজতেই পরপর দু’দিন এই দুই তলায় যান সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁরা বোঝার চেষ্টা করেন হাসপাতালের ওটি রুমে ওই তরুণী চিকিৎসকে ডেকে এনে খুন করা হয়েছে কি না। আর যদি এখানে খুন করা হয়ে থাকে তাহলে দেহ সিসি ক্যামেরার নজর এড়িয়ে কী চতুর্থ তলের সেমিনার হলে আনা সম্ভব। সেই কারণে ওই ফ্লোরগুলিতে থাকা সিসি ক্যামেরা কাজ করছে কি না তার তথ্য নেন অফিসাররা। এই জায়গা কী ঘটনাস্থল হতে পারে তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলে। 

    পাশাপাশি, তরুণী চিকিৎসকের দেহ সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে একাধিক ত্রুটি মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। জানা যাচ্ছে, তরুণীর দেহ মর্গে নিয়ে যাওয়ার পর যে তাপমাত্রা থাকা উচিত তার পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যায়। তদন্তকারীরা মনে করছেন, গোটাটাই করা হয়েছে অত্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক। যাতে দেহে দ্রুত পচন ধরে। তারফলে ময়নাতদন্তের সময় অনেককিছুই ধরা পড়বে না। শুধু তাই নয়, দেহ দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষিত রাখার জন্য ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়নি। কেন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা এবং এর পিছনে কার নির্দেশ কাজ করেছে, সেটাই জানার চেষ্টা করছে এজেন্সি। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সংগৃহীত নমুনা পর্যাপ্ত ছিল কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার তরুণীর বাড়িতে জানিয়েছিলেন, তাঁকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, তাহলে কী সেখানে মৃত ঘোষণা করা হয় ওই তরুণী চিকিৎসককে। সেক্ষেত্রে দেহ সোজা মর্গে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁর মা-বাবা মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখেছিলেন সেমিনার রুমে। তাহলে কীভাবে দেহ সেখানে এল, তা স্পষ্ট নয়।  ইমার্জেন্সিতে  কে  নিয়ে গেল তার খোঁজ এখনও পায়নি সিবিআই। এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে। একইসঙ্গে সন্দীপ দাবি করছেন, চেস্ট মেডিসিন বিভাগের এক অধ্যাপক সকাল দশটা নাগাদ ফোন করে ঘটনা জানান। ওই সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন। হাসপাতালে আসার পথে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, প্রাক্তন সুপার সহ পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে তিনি ওই সময় সত্যি বাড়িতে ছিলেন কি না, জানতে তাঁর টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা চলছে।  অন্যদিকে, এদিন পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে শুভ্র মিত্রর নাম ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এই মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে সন্দীপ ঘোষের নাম ঘোষণা করার পর তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)