• রাজশাহীর গ্রামে অবাধে লুটপাট, বাড়ি দখল, প্রাণভয়ে সীমান্ত পেরিয়ে মুর্শিদাবাদ ঢুকতে চাইছেন দুর্গতরা
    বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বাংলাদেশে অরাজকতা অব্যাহত। রাজশাহীর বিভিন্ন হিন্দু গ্রামে অবাধে চলছে লুটপাট। বাড়িঘর দখল করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী হাটে বাজারে জিনিসপত্র অবাধে লুট করা হচ্ছে। আতঙ্কে ঘরছাড়া বহু পরিবার। রাজশাহী সীমান্ত পেরিয়ে অনেক বাংলাদেশি এদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। গত কয়েকদিনে জলঙ্গি ও রানিনগর সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশিদের আনাগোনা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রানিনগর সীমান্তে গ্রেপ্তার হয়েছে রাজশাহীর এক যুবক। তার বাড়ি রাজশাহীর নাটোর এলাকায়। বিএসএফকে সে জানিয়েছে, ব্যাপক অত্যাচারিত হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। বিএসএফ তাকে পাকড়াও করে রানিনগর থানার পুলিসের হাতে তুলে দেয়। ধৃতকে শুক্রবার লালবাগ মহাকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। 

    প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিএসএফ আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, রাজশাহীর নাটোর এলাকার ওই যুবকের বাড়ি ও দোকান লুট করা হয়। সে ভয়ে এদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছিল। তার মতো আরও ৪০টি পরিবারের লোকজন সেখানে অত্যাচারিত হয়েছে। তারা বাড়িঘর ছেড়ে  পরিজনদের নিয়ে অন্যত্র গা ঢাকা দিয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছে তারাও। রানিনগর থানার পুলিসের হাতে ওই অনুপ্রবেশকারীকে তুলে দিয়েছে বিএসএফ। রানিনগর থানার এক পুলিস অফিসার বলেন, ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা রুজু করে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে। বিচারক তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা জানতে পেরেছি, ওপারে অরাজকতার জেরে সে ভয়ে পালিয়ে এসেছে। তার মতো আরও অনেকেই নাকি ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রয়েছে। 

    বাংলাদেশ অস্থিরতা তৈরি হওয়ার পর থেকেই এপারের সীমান্তে বিএসএফ অত্যন্ত তৎপর। সীমান্ত এলাকার থানাগুলিকে হাই অ্যালার্ট করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিএসএফ ও পুলিসের আধিকারিকরা মানুষের সঙ্গে কথা বলে অনুপ্রবেশকারী আটকানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়েছেন। বিএসএফের তরফে গ্রামে বৈঠক করে বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়েছে। গ্রামের নতুন কোনও মুখ বা অপরিচিত কোনও ব্যক্তির দেখা মিললে বিএসএফ ক্যাম্প কিংবা স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ এলাকায় কাঁটাতার না থাকায় বিএসএফকে বাড়তি নজরদারি চালাতে হচ্ছে। পদ্মায় জল সীমানায় স্পিড বোটে দু’বেলা নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ। কিন্তু, রাতের অন্ধকারে ওপার থেকে অত্যাচারিত হয়ে অনেক মানুষ খোলা সীমান্ত দিয়ে এপারে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে। যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর। 

    বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, আমরা সীমান্তে প্রতিমুহূর্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছি। কোনও অনুপ্রবেশকারীকে এপারে ঢুকতে দেওয়া হবে না। গ্রামবাসীদেরও সচেতন করেছি। যাতে এপারের মানুষ কোনও অনুপ্রবেশকারীকে সহযোগিতা না করে।
  • Link to this news (বর্তমান)