• নার্সকে নির্যাতনের কথা স্বীকার, তদন্তের জন্য বিজেপি নেতার বাড়ি সিল পুলিসের 
    বর্তমান | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সোদপুরে বাড়িতে ডেকে নার্সকে যৌন অত্যাচার কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। বরং পরিকল্পনা করেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন সোদপুরের ধৃত বিজেপি নেতা। কারণ তাঁর মা বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়িতে নেই। তিনি অসুস্থও নন। সেই মায়ের অসুস্থতাকে অজুহাত করেই দক্ষিণ কলকাতার একটি সংস্থা থেকে ভাড়া করে নার্সকে বাড়িতে এনেছিলেন। পরিকল্পনা করেই বৃহস্পতিবার রাতে নার্সের উপর শারীরিক অত্যাচার করেন। পুলিস জানিয়েছে, প্রাথমিক জেরায় ধৃত ব্যক্তি অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। শুক্রবার ঘোলা থানার পুলিস ধৃতের বাড়ির ফরেন্সিক তদন্তের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে। ওই বাড়ি থেকে যাবতীয় তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের জন্য সিল করার পাশাপাশি বাড়ির সামনে পুলিস পিকেট বসানো হয়েছে। স্থানীয়রা ধৃত বিজেপি নেতার কঠোর সাজার দাবিতে সরব হয়েছেন।

    ধৃত বিজেপি নেতার নাম স্পন্দন দাস। বাড়ি পানিহাটি পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাটাগড় রামকৃষ্ণপল্লি এলাকায়। প্রসঙ্গত, ওই নাটাগড় এলাকা আর জি করে খুন হওয়া চিকিৎসকের বাড়ি। প্রায়শই বিচার চেয়ে অন্যান্য প্রতিনিধি দলের মতো রাজ্য বিজেপি নেতারা মৃত চিকিৎসকের বাড়িতে আসছেন। কিন্তু সেই দলের নেতার এহেন কীর্তিতে পানিহাটি জুড়ে ক্ষোভের পারদ চড়তে শুরু করেছে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, নার্সকে যৌন নির্যাতনের ছক অনেক আগে থেকেই করে রেখেছিলেন বিজেপি নেতা। সেকারণে, স্থানীয় সংস্থা থেকে নার্স না নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার সংস্থাকেই সে বেছে নিয়েছিল। এরপর মায়ের অসুস্থতার কথা বলে নার্স বুক করে। এরপর নার্স বাড়িতে এলে পূর্ব পরিকল্পনা মতো তাঁকে আটকে রেখে মদ্যপ অবস্থায় অত্যাচার করে। সারারাত অত্যাচারের পর ভোর তিনটে নাগাদ সে কিছুটা তন্দ্রাছন্ন হতেই ওই নার্স প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। পাড়ার এক ব্যক্তির বাড়িতে কোনওমতে আশ্রয় নেয়। সকালে এলাকাবাসী জানতে পেরে স্পন্দনকে পাকড়াও করে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও একইভাবে বিভিন্ন সংস্থা থেকে মহিলাদের বাড়িতে এনে সে অত্যাচার করেছে। প্রায়শই মহিলাদের সে বাড়িতে আনত। কিন্তু বহিরাগত মহিলাদের সে ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দিত। কিন্তু এক্ষেত্রে অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেকারণে, ওই নার্স বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়ার এক বাসিন্দার বাড়িতে আশ্রয় নিতেই সবকিছু প্রকাশ্যে আসে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতকে জেরা করে আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)