বৃহস্পতিবার গড়বেতায় আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলের আয়োজক ছিল ‘গড়বেতার ছাত্রছাত্রী ও নাগরিকবৃন্দ’। সেই ‘অরাজনৈতিক’ মিছিলের ব্যানারে ‘বাংলা নিজের মেয়ের নিরাপত্তা চায়’ লেখা নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা। আয়োজকরা অবশ্য দাবি করেছে, এ দিনের প্রতিবাদ মিছিল কোনও রাজনৈতিক দলের ছিল না, রাজনীতির স্লোগানও ছিল না। যদিও এই মিছিলে হাঁটতে দেখা গিয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের কর্মীদের।
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ গড়বেতার নতুনহাটে জড়ো হন অনেকে। তাঁদের মধ্যে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাই বেশি ছিল। অনেকে স্কুল ইউনিফর্ম পরেই আসে। আর জি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে ছাপানো ও হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল ছাত্রছাত্রীদের কাছে। মিছিলের সামনে ঢাউস ব্যানারে আর জি করের ঘটনার বিচার চাইয়ের সাথে লেখা ছিল ‘বাংলা নিজের মেয়ের নিরাপত্তা চায়’। উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের মূল স্লোগান ছিল ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’। আর জি কর কাণ্ডে তারই পাল্টা স্লোগানে এখন সরব বাম-বিজেপি।
গড়বেতায় এ দিনের প্রতিবাদ মিছিলের পিছনে আদতে সিপিএম ছিল বলে অনেকেই মনে করছে। সেই সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে মিছিলে এসএফআই নেতা-কর্মীরা শামিল হওয়ায়। গড়বেতার নতুনহাট থেকে মিছিল শুরুর আগে তাঁদের কয়েকজন বক্তব্যও রাখেন। গড়বেতা কলেজ পর্যন্ত গিয়ে মিছিল আবার ফিরে আসে নতুনহাটে। স্লোগান ওঠে ‘ফাইট ফর জাস্টিস’, যা কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের গলাতেও। মিছিলের আয়োজকরা অবশ্য বলেন, ‘‘আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল হয় গড়বেতার ছাত্রছাত্রী ও নাগরিকবৃন্দের ডাকে। এতে সবাইকেই আমরা আসার জন্য বলেছিলাম। এসেওছেন অনেকে। মিছিল অরাজনৈতিকই ছিল।’’ মিছিলে ছিলেন এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি সুকুমার মাজি। তাঁরও দাবি, ‘‘আমরা মিছিলে ছিলাম। তবে কোনও পলিটিক্যাল ব্যানারে মিছিল হয়নি।’’
এখানেই প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল ও তাদের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি। তৃণমূলের গড়বেতা ১ ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘আর জি কর নিয়ে বাম- বিজেপির সখ্য, বাংলাকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। যেমন ছাত্র সমাজের নামে নবান্ন অভিযানে ছিল বিজেপি, তেমন এখানেও ছাত্রছাত্রীদের সামনে রেখে পিছনে ছিল বাম-বিজেপি।’’ টিএমসিপি-র গড়বেতার নেতা মতিকুল্লা মণ্ডলেরও দাবি, ‘‘আর জি কর অজুহাত, আসলে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে এসএফআই-এবিভিপি।’’ বিজেপি নেতা মদন রুইদাস পাল্টা বলেন, ‘‘নিজেদের দোষ ঢাকতে তৃণমূল এখন সবেতেই বিজেপির ভুত দেখছে। তবে মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না।’’