পুরুলিয়া জেলার ২০টি ব্লকে শুরু হয়েছে সামাজিক নিরীক্ষার কাজ। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণ, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা এবং সামাজিক সহায়তা প্রকল্পের আওতাধীন বিষয়গুলি সরেজমিনে দেখা হবে ওই সামাজিক নিরীক্ষার মাধ্যমে। শেষ পর্যায়ে গ্রামসভা ও জনশুনানি করা হবে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, ‘‘বিভিন্ন সরকারি কাজ সামাজিক নিরীক্ষার মাধ্যমে পরিদর্শন করা হয়। ভিআরপিদের দিয়ে এই কাজ করানো হচ্ছে।’’
বুধবার জেলার বিভিন্ন ব্লকে ওই কাজের সূচনার অঙ্গ হিসেবে গ্রাম পঞ্চায়েতে সভা করেন সামাজিক নিরীক্ষকেরা। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকায় কর্মরত ভিআরপি তথা গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা সামাজিক নিরীক্ষার কাজে মাঠে নামেন।
সামাজিক সহায়তা প্রকল্পে যাঁদের ভাতা পাওয়ার কথা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁরা নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন কি না। মৃত ও ভুয়ো উপভোক্তা থাকলে তাঁদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। ভিআরপিদের নিজের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বাদে আশপাশের গ্রাম পঞ্চায়েতে সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
তবে এক দিনে বেশি বাড়ি পরিদর্শন করা যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন গ্রামীণ সম্পদ কর্মীরা। ঝালদা ২ ব্লকের গ্রামীণ সম্পদ কর্মী কিরীটী ওঝা বলেন, ‘‘এক দিনে এতগুলি কাজ আমরা কী ভাবে শেষ করব, বুঝে উঠতে পারছি না। হিমশিম খেতে হচ্ছে।’’ তাঁদের আক্ষেপ, প্রশাসন যখন যা কাজ দেয়, তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে করার চেষ্টা করেন। অথচ এতদিনেও তাঁরা চুক্তিভিত্তিক কর্মীর স্বীকৃতি পর্যন্ত পেলেন না। অথচ ব্লক ও পঞ্চায়েতের বহু কাজ, ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ তাঁদের দিয়েই করানো হচ্ছে। কিন্তু পুজোয় বোনাসটুকুও দেওয়া হয় না।’’
পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাকলতোড় পঞ্চায়েতের গ্রামীণ সম্পদ কর্মী গৌতম মাহাতো বলেন, ‘‘আমাদের কাজের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে অথচ পারিশ্রমিক বাড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ৭৫০ টাকা ভাতা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন তা-ও কার্যকর হয়নি। এমনকি ২০২২ সালের সামাজিক নিরীক্ষার টাকাও আমরা পাইনি।’’ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা রাজ্য প্রশাসন জানে।