ফের রাস্তার মধ্যে এক তরুণীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়। এ বারের ঘটনাস্থল সল্টলেকের ফার্স্ট অ্যাভিনিউ। বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ হিমাংশু পাধি নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও প্রশ্ন উঠেছে কমিশনারেট এলাকায় সন্ধ্যায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে।
আর জি কর হাসপাতালে পড়ুয়া-চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘিরে প্রতিদিনই বিক্ষোভ-প্রতিবাদ মিছিল চলছে রাজ্যে। শুক্রবারও বিজেপির মহিলা মোর্চা সল্টলেকে রাজ্য মহিলা কমিশনের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এ দিন প্রতিবাদ মিছিল বার করে বিধাননগর কেন্দ্রীয় বাজার সমিতিও। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে অল্প দিনের ব্যবধানে প্রকাশ্যে দুই তরুণী যৌন হেনস্থার শিকার হলেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে সল্টলেকের অরুণাচল ভবনের কাছে। পুলিশ জানায়, হিমাংশু সাইকেলে চেপে যাচ্ছিল। তরুণী রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে ওই যুবক তাঁকে যৌন হেনস্থা করে। তরুণী চিৎকার করতেই পালাতে চেষ্টা করে হিমাংশু। ঘটনাচক্রে, বিধাননগর উত্তর থানার গাড়ি সেই সময়ে সেখানে টহল দিচ্ছিল। পুলিশ দ্রুত ওই যুবককে ধরে ফেলে। শুক্রবার হিমাংশুকে বিধাননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজত দেন বিচারক। আদালত সূত্রের খবর, তরুণীর গোপন জবানবন্দি করাতে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
দিন দশেক আগে নিউ টাউনে প্রকাশ্য রাস্তায় এক নার্সকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল সাইকেল আরোহী এক যুবকের বিরুদ্ধে। সে দিন ওই নার্স কাজ শেষ করে হাসপাতালের বাইরেই বাড়ি ফেরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। তখনই ঘটনাটি ঘটে।
উল্লেখ্য, বিধাননগরের সল্টলেক কিংবা নিউ টাউনের মতো এলাকার রাস্তা শহরের অন্যান্য জায়গার তুলনায় এখনও অনেকটাই ফাঁকা। সন্ধ্যা নামলে নির্জনতাও বাড়ে। সেখানে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে অপরাধ করে দুষ্কৃতীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। একই সঙ্গে, এলাকার অনুপাতে কমিশনারেট এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশেরও অভাব রয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি যেখানে ঘটে, সেখানে পর্যাপ্ত আলো ছিল না বলে দাবি পুলিশের। অতীতে সল্টলেক কিংবা নিউ টাউনের রাস্তায় যৌন হেনস্থা কিংবা ছিনতাইয়ের একাধিক ঘটনা মহিলাদের সঙ্গে ঘটেছে। নিউ টাউনে এক সময়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্যানিক বাটন বসানোর পরিকল্পনা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, সেই সব প্যানিক বাটনের সংযোগ থাকবে থানার সঙ্গে। কেউ বিপদে পড়ে প্যানিক বাটন টিপলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছবে। কিন্তু বাস্তবে সেই সব প্যানিক বাটন এখনও চালু করা যায়নি।
বিধাননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, সামগ্রিক ভাবে বিধাননগরের নিরাপত্তা নিয়ে রাতে নাকা তল্লাশি, উইনার্স বাহিনী-সহ সব ধরনের ব্যবস্থাই রয়েছে। মহিলাঘটিত অপরাধ ঠেকাতে বিভিন্ন সময়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানও করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘দু’টি ঘটনাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’