এই সময়, তমলুক: চিকিৎসক এক জন। অথচ একই সময়ে দু’জায়গায় অপারেশন করেছেন। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে এমন বিল জমা পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। এমন ভুতুড়ে কাণ্ড নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছেন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা। তদন্তে নেমে তাঁরা জানতে পেরেছেন, এক একজন চিকিৎসক ১৫ থেকে ২০টি নার্সিহোমের সঙ্গে যুক্ত।তমলুকের একজন চিকিৎসক আবার ২৯টি নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত। একজন চিকিৎসক এক সঙ্গে ক’টি নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, তা নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দিষ্ট কোনও গাইডলাইন নেই। তবে এক জন চিকিৎসক একই সময়ে একাধিক জায়গায় কী ভাবে অপারেশন করতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নার্সিংহোমগুলিতে এমন একাধিক অনিয়ম নজরে আসার পরে ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ভাঙার অভিযোগে ৯৩ জন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। ৭০টি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। তবু অনিয়ম বন্ধে এতদিন কেন কড়া মনোভাব নেওয়া হয়নি, প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ‘সব চিকিৎসক অসৎ নন। কী করে দিনের পর দিন এ ভাবে ভুয়ো বিল করে সরকারি টাকা লুট করা হয়েছে তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার।’
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্যসাথীর বিল চেকিংয়ের সময়ে অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে। এরপর ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। প্রাথমিক প্রমাণের পরে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে শোকজের জবাব দিয়েছেন। উত্তর খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল তা জানতে চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্সিংহোমগুলিকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে। এরপর আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অভিযুক্ত চিকিৎসকরা কি সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত?
সিএমওএইচ বলেন, ‘ওই চিকিৎসকদের কে কোন হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত, এখনও পরিষ্কার নয়। তদন্ত চলছে। তবে কিছুদিন আগে ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট পোর্টাল থেকে বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসনের। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দু’টি বিল থেকে দেখা যাচ্ছে, এক জন চিকিৎসক ৭০ কিলোমিটারের ব্যবধানে দু’টি নার্সিংহোমে একই সময়ে অপারেশন করেছেন।’