• নয়া ঘোষণা ফেডারেশনের! হেমা কমিটির আদলে আসছে 'সুরক্ষা বন্ধু'
    আজ তক | ৩১ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital Case) মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ- খুনের ঘটনার জেরে এখনও ধুন্ধুমার শহর- শহরতলি। সুবিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে, প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের কর্মবিরতি চলছে এখনও। গর্জে উঠেছে দেশবাসী। এমনকী প্রতিবাদে সরব হয়েছেন প্রবাসীরাও। ৩১ বছর বয়সী মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুতে সরব সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন বিনোদন জগতের শিল্পী ও কলাকুশলীরাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় বা পথে নেমে 'জাস্টিস' (Justice) চাওয়াতেই শুধু থেমে নেই স্টুডিওপাড়া। সম্প্রতি  টলিউডে (Tollywood) কাজের পরিবেশ ঠিক করতে, নিজেদের সুরক্ষার জন্যে কিছু আবেদন নিয়ে চিঠি তৈরি করে উইমেনস ফোরাম ফর স্ক্রিন ওয়ার্কার্স প্লাস (Womens' Forum for Screen Workers+)। এবার তারই সমাধান জানানো হল ফেডারেশনের তরফে।  

    এক দিকে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের ঝড়,  অন্যদিকে, হেমা কমিটির রিপোর্ট  (Hema Committee Report) ঘিরে মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতের উত্তাল পরিস্থিতি। টলিপাড়াতেও একের পর এক নারী নিগ্রহের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। যদিও টলিপাড়ায় এই ধরণের হেনস্থার ঘটনা নতুন নয়। বহু ক্ষেত্রে কোনও মহিলারা এগিয়ে এসে অভিযোগ করতে ভয় পান। আরজি করের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ২০২৪ সালে এসেও, মহিলাদের অবস্থান ঠিক কোথায়। টলিউডের মহিলা কর্মীরা সম্প্রতি একজোট হয়ে প্রশ্ন তোলেন 'সিস্টেম'-র বিরুদ্ধে? ইম্পা (Eastern India Motion Picture Association/ EIMPA), আর্টিস্ট ফোরাম (West Bengal Motion Picture Artist Forum), ফেডারেশন (Federation of Cine Technicians & Workers of Eastern India) ও টেলি অ্যাকাডেমির (Tele Academy) চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে এই চিঠি দেওয়া হয় গত মঙ্গলবার। 

    এরপরই, দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রির মতো নতুন পদক্ষেপ নিল টলিউড। শুক্রবার সন্ধ্যায় তারই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। টলিউডে ঘোষণা হল 'সুরক্ষা বন্ধু' কমিটির নাম। কর্মরত অভিনেত্রী বা মহিলা কলাকুশলীরা যাতে সুরক্ষা পান এবং নির্যাতনের শিকার হলে তার মোকাবিলা করতে পারেন -সে বিষয়ে সহযোগিতা করবে এই কমিটি।  

    কীভাবে কাজ করবে 'সুরক্ষা বন্ধু'? ফেডারেশনের প্রকাশিত বিবৃতি অনুযায়ী, প্রত্যেক গিল্ডের থেকে একজন করে মহিলা সদস্য নিয়ে এই কমিটি গঠিত হবে। অফিসিয়াল ই-মেলে অভিযোগকারিণী তাঁর সমস্যা লিখিত জানাবেন। ফেডারেশন ইতিমধ্যেই খ্যাতনামী আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাঁরা অভিযোগকারিণীর হয়ে আইনি লড়াই লড়বেন। অভিযোগকারিণী আর্থিক দিক থেকে দুর্বল হলে ব্যয়ভার বহন করবে ফেডারেশন। একই ভাবে যোগাযোগ করা হয়েছে প্রথম সারির সেবা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও। যাতে নির্যাতিতা চিকিৎসা পান। মানসিক বিপর্যয় রুখতে সেখানে মনোবিদও থাকবেন। স্বরূপ বিশ্বাস জানান, এই ব্যবস্থা যাতে দ্রুত হয়, তার জন্য ফেডারেশন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে।

    প্রসঙ্গত, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা, সিরিয়াল ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করা হয় উইমেনস ফোরামের পাঠানো চিঠিতে। প্রশ্ন করা হয়, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানানোর জন্য কোনও প্রতিষ্ঠান কি রয়েছে? পকসো আইনের শর্তগুলো কি মেনে চলা হচ্ছে? চিঠিতে লেখা ছিল, "প্রত্যেকদিন আমাদের নানা ভাবে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয়। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে নারী, শিশু এবং প্রান্তিক পরিচয়ের মানুষদের নির্যাতনের কথাও শোনা যায়। তবুও, আমাদের কাছে এমন কোনও কার্যকরী সহায়তা ব্যবস্থা নেই যেখানে ভারতীয় আইন অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রতিকারের দাবি জানাতে পারি।" 

    বাংলা ইন্ডাস্ট্রির মহিলা কর্মীদের অভিযোগ, এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও আলাপ আলোচনা করা হয় না। এছাড়াও ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের জন্য যথাযথ ভাবে ইন্টিমেসি কোর্ডিনেটর বা ডিরেক্টর নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে। লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলেছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি যৌন হেনস্তার অভিযোগ যেখানে জানানো যাবে, এরকম ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। এই চিঠি পাওয়ার পরই পদক্ষেপ নেওয়া হয় ফেডারেশনের তরফে।  

     
  • Link to this news (আজ তক)